রাজবাড়ীতে প্রবাসীর স্ত্রী সালমা হত্যায় যুবক গ্রেফতার

২ সপ্তাহ আগে
রাজবাড়ীতে প্রবাসীর স্ত্রী সালমা বেগম (২৫) হত্যা মামলায় হেমায়েত উল্লাহ্ (৩০) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি নোয়াখালী জেলার চর জব্বর থানার দক্ষিণ চর ক্লার্ক গ্রামের আহসানউল্লাহর ছেলে।

বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) শরীফ আল রাজীব।


এর আগে মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকাল ৬টার দিকে সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের হাউলি জয়পুর গ্রামে স্বামীর বাড়ির ঘরের খাটের ওপর সালমার গলায় ওড়না পেঁচানো মরদেহ দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। পরে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।


সালমা হাউলি জয়পুর গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী আজাদ মল্লিকের স্ত্রী। তার সাদিক নামে ৭ বছর বয়সি এক ছেলে ও সিনহা নামে ৫ বছর বয়সী এক মেয়ে রয়েছে।

আরও পড়ুন: নোয়াখালীতে যমজ বোনকে ধর্ষণ, অভিযুক্ত গ্রেফতার

সালমার শ্বাশুড়ি লতা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে আজাদ চার বছর ঢাকার নারায়নগঞ্জে দর্জির কাজ করেছে। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সে নারায়ণগঞ্জে থাকত। দুই বছর আগে সে পরিবার নিয়ে বাড়িতে চলে আসে। দেড় বছর আগে সে সৌদি আরব চলে যায়। সে সৌদি আরব যাওয়ার পর থেকে তার স্ত্রী সালমা দুই শিশু সন্তান নিয়ে বাড়িতেই থাকত।’


লতা বেগম বলেন, ‘ঈদের দিন সোমবার (৩১ মার্চ) দিবাগত রাত ১১টার দিকে সালমা দুই শিশু সন্তান নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমাতে যায়। অন্য ঘরের এক কক্ষে আমি ও আমার ছোট ছেলে রাহাত ঘুমাই, অন্য কক্ষে আমার বড় ছেলে আমজাদ ও তার স্ত্রী মিম ঘুমায়। সকাল ৬টার দিকে আমি ঘুম থেকে উঠে সালমার ঘরের সামনে গিয়ে নাতি সাদিককে ডাক দেই। এসময় সাদিক ঘরের ভেতর থেকে কান্না করে বাইরে থেকে দরজা খুলতে বলে। তখন আমি দেখি ঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকানো। আমি দরজা খুলে ঘরের ভেতর ঢুকে দেখি সালমা খাটের ওপর চিৎ করে শোয়া অবস্থায় রয়েছে। তার শরীর কাঁথা দিয়ে ঢাকা এবং গলায় ওড়না দিয়ে টাইট করে পেঁচানো। তার দুপাশে দুই সন্তান বসে আছে।’

আরও পড়ুন: রংপুরে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতার ২২

সালমার সাত বছর বয়সি ছেলে সাদিক বলে, ‘রাতে আমাদের ঘরে হেমায়েত এসেছিল। তার সঙ্গে মুখোশ পড়া আরও দুজন ছিল। তারা আমার আম্মুকে মেরেছে। আমরা যখন ঢাকায় থাকতাম, তখন হেমায়েত আমাদের আঙ্কেল হতো।’


রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) শরীফ আল রাজীব বলেন, ‘বুধবার (২ এপ্রিল) নিহত সালমার বাবা সালাম শেখ বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সে সময় থেকেই ক্লুলেস এ হত্যার কারণ উদঘাটন এবং ঘাতককে গ্রেফতারে তৎপর হয় জেলা পুলিশ। পুলিশ সুপার মোছা. শামিমা পারভীন স্যারের নেতৃত্বে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় দ্রুত আসামি শনাক্ত করা হয়। তদন্তে হত্যাকাণ্ডে হেমায়েত উল্লাহর জড়িত ছিলেন বলে জানা যায়। বুধবার দিবাগত রাতে রাজবাড়ী থানা এবং জেলা ডিবি পুলিশ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে নোয়াখালী জেলার চর জব্বর থানা পুলিশের সহায়তায় আসামি হেমায়েতকে গ্রেফতার করে।’


তিনি আরও বলেন, ‘পরকীয়া সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরে আসামি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নিহত সালমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। ফোনটি সালমা হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল থেকে কাছাকাছি নূরপুর গ্রামের কৃষ্ণ হালদারের পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়।’


আসামিকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলেও জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীব।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন