রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা ছাড়া গণমাধ্যমের টেকসই সংস্কার সম্ভব নয়, বললেন বক্তারা

২ সপ্তাহ আগে
রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা ছাড়া গণমাধ্যমের টেকসই সংস্কার সম্ভব নয় বলে মনে করেন দেশের জেষ্ঠ্য সাংবাদিকরা।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত সংলাপে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তারা।

 

সংলাপে সাংবাদিকরা বলেন, বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী দ্বারা মিডিয়া পরিচালিত হওয়ায় স্বাধীন গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা গড়ে উঠছে না। এসময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতা রক্ষা করা অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য।

 

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব পরামর্শ দেন স্বাধীন সাংবাদিক ইউনিয়ন গঠনের।

 

গণমাধ্যম যাতে অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করতে পারে, সেটাই অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য-- এ কথা জানিয়ে তিনি ফের বলেন,

 এই সাড়ে চার মাসে আমরা কোনো পত্রিকাকে বলি নাই এই নিউজটা সরান, আমরা কোনো পত্রিকাকে বলি নাই একে সরিয়ে একে নিন। আমরা আমাদের মাধ্যমকে বলেছি, কারও কোনো নিউজের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবেন না।

 

আর গণমাধ্যমে সংস্কার কমিশনের প্রধান ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কামাল আহমেদ বলেন, সাংবাদিক সুরক্ষা আইনের ন্যূনতম বেতন কাঠামো ঠিক করে তা চালুর সুপারিশ করবেন তারা।

 

তিনি বলেন, 

সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তা থাকতে হবে। তাদের যদি আর্থিক নিরাপত্তা না থাকে, তাহলে তাদের সামাজিক নিরাপত্তাও থাকবে না। আর সেই কারণে সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তার সুপারিশ অবশ্যই থাকতে হবে। সাংবাদিক সুরক্ষা আইনের পাশাপাশি ন্যূনতম বেতন কাঠামো ঠিক করে তা চালুর সুপারিশ করা হবে।

 

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গণমাধ্যমকে স্বাধীন, বস্তুনিষ্ঠ এবং শক্তিশালী করার লক্ষে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। এ নিয়ে অংশীজনদের সুপারিশ ও মতামত গ্রহণ করছে কমিশন। তারই ধারাবাহিকতায় সকালে গণমাধ্যম সংস্কার নিয়ে সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ-সিজিএস।

 

এ সংলাপে অংশ নিয়ে সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেন, 

১০ হাজার টাকার নিচে বেতন পান বাংলাদেশের ৮০ ভাগ সাংবাদিক। তারা খেতে পায় না। তাদের অন্যের খাবার নিয়ে কথা বলতে হয়। পেটে ক্ষুধা নিয়ে সাংবাদিকতা চলে না। বিনিয়োগকারীরা এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল না হলে স্বাধীন সংবাদিকতা সম্ভব নয়।

 

মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন,

 রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা ছাড়া গণমাধ্যমের টেকসই সংস্কার সম্ভব নয়। রাজনৈতিক সরকার যদি এটা বাস্তাবায়ন না করে, তাহলে আপনি আমি পারব না, এই সরকার পারবে না। পরের সরকার আসলে এটা হবে। পত্রিকা অফিসের সামনে গরু জবাই হয়, এদেশে আমরা কী করে সাংবাদিকতা করব।    

 

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, 

সাংবাদিকদের সুরক্ষা দিতে আইনের পক্ষে নানাভাবে কাজ করতে হবে। আবার সেটা যেন স্বেচ্ছাচারিতায় রূপ না নেয়।

 

এসময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা বলেন, সংস্কারের জন্য কমিশনগুলো দিনরাত পরিশ্রম করছেন। কিন্তু রাজনৈতিক সরকার এসে সেটা বাস্তবায়ন না করলে কোনো লাভ হবে না। দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা।

 

আরও পড়ুন: ঐক্যের আহ্বান ও নানা পরামর্শ এলো বিজেসির ৫ম সম্মেলন থেকে

 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা না করে সে ব্যাপারেও উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ বক্তাদের।

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন