রাখাইন পল্লীতে মুন্ডির স্বাদ নিতে পর্যটকদের ভিড়

১ সপ্তাহে আগে
রাখাইন সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী খাবার মুন্ডি। দেখতে অনেকটা নুডলসের মতো এই খাবারটির উৎপত্তি মিয়ানমারে। কক্সবাজার শহরের রাখাইন পল্লীতে গেলে সহজেই পাওয়া যায় এই জনপ্রিয় খাবার।

মুন্ডি দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটি বার্মিজ মুন্ডি, অপরটি দেশি মুন্ডি। বার্মিজ মুন্ডি চিকন ও বাজারজাতকৃত, আর দেশি মুন্ডি তৈরি হয় বাড়িতে হাতে বানিয়ে। মুন্ডিতে সাধারণত চিংড়ি শুঁটকি, লেবু, ভাজা তেল, গোল মরিচ, শুকনা মরিচসহ নানা উপকরণ দেয়া হয়। এতে বিশেষ এক ধরনের মসলা ও লবণ মিশিয়ে তৈরি ঝোলও যোগ করা হয়।

 

কক্সবাজারের বৌদ্ধ মন্দির সড়কের রাখাইনপল্লীতে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত মুন্ডি বিক্রির দোকানগুলোতে থাকে উপচে পড়া ভিড়। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি এখন পর্যটকরাও রাখাইনপল্লীতে মুন্ডির স্বাদ নিতে আসেন।

 

নুডলসের মতো, স্বাদে আলাদা—মুন্ডি এখন সবার পছন্দ। ছবি: সময় সংবাদ

 

মুন্ডি খেতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা উচিং থেন বলেন, ‘এটা আমাদের ঐতিহ্যবাহী খাবার। আমরা প্রায়ই আসি এখানে খেতে। এটাকে স্যুপও বলা যায়।’ খিং চেন বলেন, ‘স্পেশাল মুন্ডি খেতে আসছি। এটা অনেক সুস্বাদু খাবার।’

 

খিং মুন্ডি লাইভ মিনি রেস্তোরাঁর মালিক খিং রাখাইন বলেন, ‘রাখাইনদের ঐতিহ্যবাহী মুন্ডি এখন সবার কাছে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এখানে চিকেন মুন্ডি স্যুপ, খিং স্পেশাল মুন্ডি স্যুপ, এগ মুন্ডি স্যুপ ও রেগুলার মুন্ডি স্যুপসহ কয়েক ধরনের মুন্ডি পাওয়া যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো খিং স্পেশাল মুন্ডি স্যুপ, যেখানে নুডলস, ডিম, চিকেন, মাছসহ সব উপাদান একত্রে দিয়ে তৈরি হয় বিশেষ স্যুপ।’

 

আরও পড়ুন: রাখাইনদের জলকেলিতে নতুনের বার্তা, ফিলিস্তিনে নিহতদের স্মরণ

 

প্রতি বাটি মুন্ডির দাম ৫০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে। প্রতিদিনই এনজিও কর্মী, স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকেরা মুন্ডি খেতে ভিড় করেন। প্রতি সোমবার দোকানগুলো বন্ধ থাকে, তবে শুক্রবারে ভিড় থাকে সবচেয়ে বেশি।

 

মা টিং টিং রাখাইন জানান, মুন্ডি চাল থেকে তৈরি করা হয়। পরিষ্কার চাল কয়েক দিন ভিজিয়ে পিষে মণ্ড করে, যা গরম পানিতে সেদ্ধ করে সুতার মতো করে বের করা হয়। এরপর তা তেল, গোল মরিচ ও চিংড়ি শুঁটকির গুঁড়াসহ নানা উপকরণে মিশিয়ে পরিবেশন করা হয়।

 

মুন্ডির স্যুপ। ছবি: সময় সংবাদ

 

ঢাকা থেকে আসা রিয়াজুল কবির বলেন, ‘প্রত্যেক অঞ্চলের নিজস্ব ব্র্যান্ডিং খাবার থাকে। মুন্ডি রাখাইনদের সাংস্কৃতিক খাদ্য এবং কক্সবাজারের একটি পরিচয়।’

 

রাখাইন সম্প্রদায়ের তথ্য অনুযায়ী, কক্সবাজার শহরের রাখাইনপল্লীতে অন্তত ১০টি স্থানে মুন্ডি বিক্রি হয়। সনাতন পদ্ধতিতে তৈরি মুন্ডির স্বাদই সবচেয়ে ভালো বলে জানায় স্থানীয়রা, যদিও বর্তমানে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড থেকে আসা কারখানার তৈরি মুন্ডিও পাওয়া যায় বাজারে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন