রসিকে হোল্ডিং ট্যাক্স ছাড়া মিলছে না নাগরিক সেবা

৩ সপ্তাহ আগে
রংপুর সিটি করপোরেশনে গৃহকর ছাড়া মিলছে না কোনো সেবা। সেবা নিতে হলে গৃহকর পরিশোধিত রশিদের কপি ও উৎসকর নেওয়ায় বিপাকে পড়েছে সেবা প্রার্থীরা। কর ছাড়া সেবা না পেয়ে বিক্ষুব্ধ সেবাপ্রার্থীরা নগরভবনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।

সেবা প্রার্থীদের অভিযোগ, নগরীতের এক লাখ বাড়ির মালিক হলেও পাঁচ লাখ ভাড়াটিয়া থাকেন। টিকাদান, জন্মসনদ, ট্রেড লাইসেন্স, ওয়ারিশান সদন, নাগরিত্বসহ সিটি করপোরেশনের সব সেবা পেতে নির্দিষ্ট মূল্য দিলেই পাওয়া যেত। কিন্তু হঠাৎ করে গৃহকর ও উৎসকর পরিশোধ ছাড়া কোনো সেবা পাচ্ছেন না তাঁরা। এমনকি বর্ধিত এলাকার হোল্ডিং না থাকলেও তাদের কাছে হোল্ডিং চাওয়া হচ্ছে। এতে হয়রানির ও ভোগান্তিতে পরেছেন তারা।


এ ঘটনায় রোববার (১৮ মে) বিকেল ৩টায় বিক্ষুব্ধ সেবাপ্রার্থীরা নগরভবনের কলাপসিবল গেট লাগিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।


সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নগরভবনের কলাপসিবল গেট লাগানো। সেবা প্রার্থীরা বাইরে বিক্ষোভ করছে। ভেতরে কর্মকর্তাদের কক্ষে ঝুলছে তালা। পৌনে ৪টায় নগর ভবনে ছুটে আসেন রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা।


নগরভবনের সামনে কথা হয় কামাল কাছনার ব্যবসায়ী অনিমেশ চন্দ্র কর। তিনি ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের জন্য এসেছেন। অনিমেশ চন্দ্র আক্ষেপ করে বলেন, ‘শহরে ব্যবসা করি। গুপ্তপাড়ায় ভাড়া থাকি। এখানে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে এসেছি। কিন্তু গৃহকর ছাড়া তাঁরা নবায়ন করছে না। আমার যেখানে ঘর নেই, ভাড়া থাকি। সেখানে কোথায় থেকে গৃহকর দিব। আর বাড়ির মালিক যদি গৃহকর বাকি রাখে এতে আমার করার কি? হয়রানি ছাড়া কিছুই না।’


বাচ্চার টিকা দিতে এসে ফিরে যাচ্ছিলেন শাহিপাড়ার রুমা বেগম। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, কোন দিন আসল। বাচ্চাদের টিকা দিতেও এখন হোল্ডিং ট্যাক্সে কাগজ লাগছে। ট্যাক্সের কাগজ ছাড়া কোনো কাজ হচ্ছে না সিটি করপোরেশনে।


আরও পড়ুন: জনবল সংকটে মুখ থুবড়ে পড়েছে রংপুরের স্বাস্থ্যখাত, ভোগান্তিতে রোগীরা


আলম নগর এলাকার বাসিন্দা লিটন মিয়া বলেন, জন্ম নিবন্ধন করাতে এখন দুই হাজার টাকা উৎসকর দিতে হচ্ছে। বস্তিতে থাকি ভাত খেতে পারি না। এতো টাকা কীভাবে দিব। এখানে সেবার নামে হরিলুট চলছে। আগে তো এমন ছিল না।


রংপুর সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে রসিকে গৃহকরের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১৮ কোটি টাকা। এপ্রিল পর্যন্ত গৃহকর আদায় করা হয় প্রায় ১১ কোটি টাকা। অর্থ বছরের শেষে লক্ষ্যমাত্রার বড় অংশ পূরণ না হওয়ায় আশঙ্কায় দেখা দেয়। বকেয়া গৃহকর আদায়ে  মাসিক সমন্বয় সভায় সিদ্ধান্ত হয় চলতি মাসে সিটি করপোরেশনের সমস্ত সেবা কার্যক্রম গ্রহণের সেবাগ্রহীতাদের গৃহকর পরিশোধের রশিদ সংযুক্ত করা হবে। তা ছাড়া সেবা দেওয়া যাবে না।


রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা বলেন, শুধু রংপুর নয়; সব সিটি করপোরেশনে এটা আছে। সব সেবার সাথে ট্যাক্স আদায় বাধ্যতামূলক। কারও যদি আপত্তি থাকে সেটা আমরা শুনছি।


এক প্রশ্নের উত্তরেও তিনি বলেন, যারা ভাড়াটিয়া, যাদের হোল্ডিং নাই। তাদেরকে বুঝিয়ে, কীভাবে বিকল্পভাবে সেবা দেয়া যায় সেটা আমরা করছি। আজকে যারা এরকম করেছে, নির্দেশনা দিয়েছে। তারা অবশ্যই জনবান্ধব, জনকল্যাণমূলক কিছু করেনি। একটা ইস্যুতে যে কর্মঘণ্টার ক্ষতি হলো, এটা কাঙ্ক্ষিত কিছু বয়ে আনতে পারে না।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন