মুফতি শফি রহ. বলেন, ‘রক্ত মানবদেহের অংশবিশেষ। দেহ থেকে নির্গত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা নাপাক হয়ে যায়। আর নাপাক বস্তুর ব্যবহার নিষিদ্ধ। এ কারণে এবং সৃষ্টির সেরা জীব মানব অঙ্গের মর্যাদার কথা বিবেচনা করে স্বাভাবিক অবস্থায় রক্তদান নিষিদ্ধ হওয়ার কথা।
তবে অস্বাভাবিক অবস্থায় বিশেষত চিকিৎসার ক্ষেত্রে ইসলাম যেহেতু কিছুটা শিথিলতা প্রদর্শন করেছে, তাই বিশেষ বিবেচনায় রক্তদানকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর কারণ হলো, রক্তের দেহান্তর ও অঙ্গান্তরে কোনো রকম কাটা-ছেঁড়ার প্রয়োজন হয় না; বরং ইনজেকশনের মাধ্যমে খুব সহজেই তা দেহ থেকে দেহে স্থানান্তর করা যায়। যেভাবে কাটা-ছেঁড়া ছাড়া মায়ের দুধ শিশুর দেহে স্থানান্তরিত হয়ে শিশুর দৈহিক বিকাশে অসাধারণ ভূমিকা রাখে।
আরও পড়ুন: দোয়া কবুল হওয়ার তিন আমল
আর শিশুকে দুগ্ধপান করানো শুধু বৈধ নয়, বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ওয়াজিব বা অত্যাবশ্যকীয়ও বটে। তা ছাড়া রক্তদান করলেও প্রাকৃতিকভাবে দেহের মধ্যে নতুন রক্তের সঞ্চার করে থাকে। অতএব যখন কোনো অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মতে, অন্যের রক্ত ছাড়া রুগ্ণ ব্যক্তির জীবন-মরণ সংকট সৃষ্টি হয়, সে ক্ষেত্রে তাকে রক্তদান করা বৈধ। তবে রক্ত বিক্রি করা কোনো অবস্থায়ই বৈধ নয়। (জাওয়াহিরুল ফিকহ)
রক্ত বিক্রি করা জায়েজ নয়। দুই অবস্থায় রক্ত দেওয়া জায়েজ আছে। এক. যদি রক্ত দেয়া ছাড়া রোগীর জীবনের আশঙ্কা দেখা দেয়। অভিজ্ঞ ডাক্তারের দৃষ্টিতে রক্ত দেয়া ছাড়া তার জীবন বাঁচানোর আর কোনো পথ না থাকে।
দুই. অভিজ্ঞ ডাক্তারের দৃষ্টিতে রক্ত দেয়া ছাড়া সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা না থাকলে। তাহলে এরূপ রোগীকে রক্তদান করা জায়েজ। রোগীর জন্যও এ অবস্থায় রক্ত দেয়া জায়েজ ও প্রথম অবস্থায় তাকে বিনা মূল্য রক্ত দেয়ার মতো কেউ না থাকলে তার জন্য রক্ত ক্রয় করা জায়েজ। তবে বিক্রি করা জায়েজ নয় কোনও পদ্ধতিতেই। (কিতাবুল ফাতাওয়া খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-২১৩)
]]>