তিনি দুনিয়াতে থাকাকালীন সময়ে আমাদেরকে চির কষ্টের স্থান জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে, চির সুখ শান্তির স্থান জান্নাতের পথে আনার জন্য বিরামহীন গতিতে দ্বারে দ্বারে বারে বারে ছুটে গিয়েছিলেন আর রাতের বেলায় আমাদের হেদায়েতের জন্য মহান প্রভুর দরবারে কেঁদে কেঁদে বুক ভাসিয়েছেন।
এখনও তিনি রওজা শরিফে শুয়ে শুয়ে আমার আপনার মায়া ও ভালোবাসায় মহান প্রভুর দরবারে ইস্তেগফার করে যাচ্ছেন। যেমন একটি হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে-
قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَيَاتِي خَيْرٌ لَّكُمْ تُحَدِّثُوْنَ وَنحدث لَكُمْ وَوَفَاتِي خَيْرٌ لَّكُمْ تُعْرَضُ عَلَى أَعْمَالُكُمْ فَمَا رَأَيْتُ مِنْ خَيْرٍ حَمِدْتُ اللَّهَ عَلَيْهِ وَمَا رَأَيْتُ مِنْ شَرِّ اسْتَغْفَرْتُ اللهَ لَكُمْ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আমার বেঁচে থাকা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। তোমরা আমার সাথে কথা-বার্তা বলতে পারো, আমিও তোমাদের সাথে কথা-বার্তা বলতে পারি। আর আমার মৃত্যুও তোমাদের জন্য কল্যাণকর। কারণ, তোমাদের প্রত্যেকের আমল আমার সামনে পেশ করা হবে। যখন আমি ভালো আমল দেখব তখন তার জন্য আল্লাহর দরবারে শোকর আদায় করব। আর যখন মন্দ আমল দেখব তখন তোমাদের জন্য ইস্তিগফার করব। (মুসনাদে বাযযার, হাদিস- ১৯২৫)
বর্তমানে আমরা গুনাহের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছি, আর গুনাহের ভয়াবহ পরিণতির কথা একবারের জন্যও মনে করছি না। অথচ আমাদের নবী আমাদের জন্য ইস্তিগফারে লিপ্ত।
আরও পড়ুন: নবীজির প্রিয় ও পছন্দের বিষয়গুলো নিয়ে সিরাতের বই ‘নবীজির প্রিয় ১০০’
আজ আমরা নিজেদের পরিণতির কথা ভুলে বসেছি। কিন্তু আমাদের নবী আমাদের পরিণতির কথা ভুলেননি। আজ আমরা আমাদের নবীকে ভুলতে বসেছি; কিন্তু আমাদের নবী আমাদেরকে ভুলেননি। আজ আমরা নবীর ভালোবাসা অন্তর থেকে বের করে দিয়েছি; কিন্তু নবীজি আমাদের ভালোবাসা তাঁর অন্তরে আগলে রেখেছেন। শুধু তাই নয়; বরং আমাদের চিন্তায় আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার ও ক্ষমা প্রার্থনা করছেন।
তাই আসুন! ঐ নবীকে ভালোবাসি। ঐ নবীর সুন্নত মোতাবিক জীবন গড়ি। তাহলেই নবীজি খুশি হবেন। নবীজির অন্তর প্রশান্ত হবে। আর নবীজি খুশি হলেই আল্লাহ তাআলা খুশি হবেন। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাওফিক দান করেন। তথ্যসূত্র: উম্মতের প্রতি নবীজির ভালোবাসা পৃ: ২৯-৩০
লেখক: সিনিয়র শিক্ষক, লালবাগ মাদ্রাসা ঢাকা, খতিব, আজিমপুর ছাপড়া মসজিদ, পরিচালক, দাওয়াতুস সুন্নাহ বাংলাদেশ