যেসব পশু দিয়ে কোরবানি দেয়া যায়

১ সপ্তাহে আগে
মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তার ইবাদতের জন্য পশু জবাই করাই কোরবানি। এর সঙ্গে আত্মত্যাগের মহিমা মিশে আছে। আদি পিতা আদম (আ.)-এর দুই পুত্র হাবিল ও কাবিল থেকে কোরবানির ইতিহাস শুরু হয়। এরপর মুসলিম জাতির পিতা ইব্রাহিম (আ.) ও তার শিশুপুত্র ইসমাইল (আ.)-এর মহান আত্মবিসর্জনের মাধ্যমে কোরবানির ইতিহাস কিয়ামত পর্যন্ত উজ্জ্বল ও অম্লান হিসেবে থাকবে।

কোরবানির নির্দেশ দিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতএব তুমি তোমার প্রতিপালকের জন্য নামাজ পড় এবং কোরবানি কর। (সুরা কাউসার : আয়াত ২)

কোরবানির নির্ধারিত দিন

হিজরি ১১তম মাস তথা হজের মাস জিলহজের ১০ তারিখ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন পুরুষ ও নারীর কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ৭ ভরি/তোলা সোনা অথবা সাড়ে ৫২ ভরি/তোলা রুপা বা এর সমপরিমাণ সম্পদ থাকলে নির্ধারিত এই দিনে কোরবানি করা ওয়াজিব।

টাকা-পয়সা, সোনা-রুপার অলঙ্কার, ব্যবসায়িক পণ্য, প্রয়োজনের অতিরিক্ত জমি, শৌখিন বা অপ্রয়োজনীয় আসবাব এসব কিছুর মূল্য কোরবানির নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

 

আরও পড়ুন: কোরবানির আগে চুল-নখ না কাটার বিষয়ে কী বলে ইসলাম?


কোরবানির জন্য যেসব পশু শর্ত

কোরবানি করার জন্য নির্দিষ্ট পশু রয়েছে। তবে এসব পশুর বয়স এবং এক পশুতে কয়জন অংশগ্রহণ করতে পারবে, এ সম্পর্কে ইসলামের অনেক দিকনির্দেশনাও রয়েছে।

যেসব পশু দিয়ে কোরবানি দেয়া যায়

ইসলামি শরিয়া যেসব পশু নির্ধারণ করে দিয়েছে, তা দিয়ে কোরবানি দিতে হবে। তা হলো ৬টি: উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা। কোরআনের ভাষায় এগুলোকে ‘বাহিমাতুল আনআম বলা হয়।’

এগুলো ছাড়া অন্য পশু দিয়ে কোরবানি জায়েজ নেই। কোরবানি করার জন্য ছাগল, ভেড়া ও দুম্বার বয়স কমপক্ষে এক বছর পূর্ণ হতে হবে। অবশ্য ছয় মাসের ভেড়া যদি দেখতে মোটাতাজা হয় এবং এক বছর বয়সের মতো মনে হয়, তাহলে তা দিয়েই কোরবানি করা বৈধ। গরু-মহিষের হতে হবে পূর্ণ দুই বছর। আর উটের পাঁচ বছর পূর্ণ হতে হবে। (হিদায়া, খণ্ড : ০৪, পৃষ্ঠা: ১০৩)

কোরবানির পশু সম্পর্কে নবীজির দিকনির্দেশনা

১. হাদিসে এসেছে, ‘তোমরা অবশ্যই নির্দিষ্ট বয়সের পশু কোরবানি করবে। তবে তা তোমাদের জন্য দুষ্কর হলে ছয় মাসের মেষ-শাবক কোরবানি করতে পার।’

২. নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ছাড়া অন্য কোনো জন্তু কোরবানি করেননি ও কোরবানি করতে বলেননি। তাই কোরবানি শুধু এগুলো দিয়েই করতে হবে।

৩. ইমাম মালেক রাহমাতুল্লাহি আলাইহির মতে, কোরবানির জন্য সর্বোত্তম জন্তু হলো শিংওয়ালা সাদা-কালো দুম্বা। কারণ নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ধরনের দুম্বা কোরবানি করেছেন বলে বুখারি ও মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে।

কোরবানির পশুতে ভাগ

উট, গরু ও মহিষ এ তিন পশু সাত ভাগে কোরবানি দেয়া যায়। হাদিসে এসেছে, ‘আমরা হুদাইবিয়াতে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে ছিলাম। তখন আমরা উট ও গরু দ্বারা সাতজনের পক্ষ থেকে কোরবানি দিয়েছি।’

কোরবানির পশুর বয়স

ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে কোরবানির পশুর বয়সের দিকটা খেয়াল রাখা খুবই জরুরি। কোরবানির পশু পরিপূর্ণ বয়সের হতে হবে। তা হলো এমন:

১. উট : কমপক্ষে পাঁচ বছর বয়সী হতে হবে।

২. গরু/মহিষ : কমপক্ষে দুই বছর বয়সী হতে হবে।

৩. ছাগল/ভেড়া/দুম্বা : এক বছর বয়সী হতে হবে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন