কোরবানির নির্দেশ দিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতএব তুমি তোমার প্রতিপালকের জন্য নামাজ পড় এবং কোরবানি কর। (সুরা কাউসার : আয়াত ২)
কোরবানির নির্ধারিত দিন
হিজরি ১১তম মাস তথা হজের মাস জিলহজের ১০ তারিখ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন পুরুষ ও নারীর কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ৭ ভরি/তোলা সোনা অথবা সাড়ে ৫২ ভরি/তোলা রুপা বা এর সমপরিমাণ সম্পদ থাকলে নির্ধারিত এই দিনে কোরবানি করা ওয়াজিব।
টাকা-পয়সা, সোনা-রুপার অলঙ্কার, ব্যবসায়িক পণ্য, প্রয়োজনের অতিরিক্ত জমি, শৌখিন বা অপ্রয়োজনীয় আসবাব এসব কিছুর মূল্য কোরবানির নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।
আরও পড়ুন: কোরবানির আগে চুল-নখ না কাটার বিষয়ে কী বলে ইসলাম?
কোরবানির জন্য যেসব পশু শর্ত
কোরবানি করার জন্য নির্দিষ্ট পশু রয়েছে। তবে এসব পশুর বয়স এবং এক পশুতে কয়জন অংশগ্রহণ করতে পারবে, এ সম্পর্কে ইসলামের অনেক দিকনির্দেশনাও রয়েছে।
যেসব পশু দিয়ে কোরবানি দেয়া যায়
ইসলামি শরিয়া যেসব পশু নির্ধারণ করে দিয়েছে, তা দিয়ে কোরবানি দিতে হবে। তা হলো ৬টি: উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা। কোরআনের ভাষায় এগুলোকে ‘বাহিমাতুল আনআম বলা হয়।’
এগুলো ছাড়া অন্য পশু দিয়ে কোরবানি জায়েজ নেই। কোরবানি করার জন্য ছাগল, ভেড়া ও দুম্বার বয়স কমপক্ষে এক বছর পূর্ণ হতে হবে। অবশ্য ছয় মাসের ভেড়া যদি দেখতে মোটাতাজা হয় এবং এক বছর বয়সের মতো মনে হয়, তাহলে তা দিয়েই কোরবানি করা বৈধ। গরু-মহিষের হতে হবে পূর্ণ দুই বছর। আর উটের পাঁচ বছর পূর্ণ হতে হবে। (হিদায়া, খণ্ড : ০৪, পৃষ্ঠা: ১০৩)
কোরবানির পশু সম্পর্কে নবীজির দিকনির্দেশনা
১. হাদিসে এসেছে, ‘তোমরা অবশ্যই নির্দিষ্ট বয়সের পশু কোরবানি করবে। তবে তা তোমাদের জন্য দুষ্কর হলে ছয় মাসের মেষ-শাবক কোরবানি করতে পার।’
২. নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ছাড়া অন্য কোনো জন্তু কোরবানি করেননি ও কোরবানি করতে বলেননি। তাই কোরবানি শুধু এগুলো দিয়েই করতে হবে।
৩. ইমাম মালেক রাহমাতুল্লাহি আলাইহির মতে, কোরবানির জন্য সর্বোত্তম জন্তু হলো শিংওয়ালা সাদা-কালো দুম্বা। কারণ নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ধরনের দুম্বা কোরবানি করেছেন বলে বুখারি ও মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে।
কোরবানির পশুতে ভাগ
উট, গরু ও মহিষ এ তিন পশু সাত ভাগে কোরবানি দেয়া যায়। হাদিসে এসেছে, ‘আমরা হুদাইবিয়াতে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে ছিলাম। তখন আমরা উট ও গরু দ্বারা সাতজনের পক্ষ থেকে কোরবানি দিয়েছি।’
কোরবানির পশুর বয়স
ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে কোরবানির পশুর বয়সের দিকটা খেয়াল রাখা খুবই জরুরি। কোরবানির পশু পরিপূর্ণ বয়সের হতে হবে। তা হলো এমন:
১. উট : কমপক্ষে পাঁচ বছর বয়সী হতে হবে।
২. গরু/মহিষ : কমপক্ষে দুই বছর বয়সী হতে হবে।
৩. ছাগল/ভেড়া/দুম্বা : এক বছর বয়সী হতে হবে।