বুধবার (২৮ মে) চার দিনের জাপান সফরের প্রথম দিনে টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লিগের (জেবিপিএফএল) প্রেসিডেন্ট তারো আসো প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এই অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
‘নিক্কেই ফোরাম ফর এশিয়া’য় যোগদান এবং জাপানি নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় অংশ নেয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টা স্থানীয় সময় দুপুর ২টার দিকে টোকিওতে পৌঁছান।
জেবিপিএফএলের প্রেসিডেন্ট তারো আসো, বাংলাদেশকে একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অধ্যাপক ইউনূসকে ধন্যবাদ জানান এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য সাধারণ নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে- সংস্কার, ছাত্র-জনতার খুনিদের বিচার এবং সাধারণ নির্বাচন। এছাড়া সরকার ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক ঋণ পরিশোধসহ অর্থনৈতিক খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
‘পূর্ববর্তী সরকার আমাদের দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে, তরুণদের এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে বাধ্য করেছে। যে ভয়াবহ বাজে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তা ঠিক করার জন্য তরুণরা আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে,’যোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার জাপান সফরকালে ১শ’ কোটি ডলারের ঋণ চাইবে ঢাকা
এ সময় গত ১০ মাসে জাপানের অব্যাহত সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা।
বাংলাদেশের চলমান সংস্কার কার্যক্রম সরাসরি দেখার জন্য অধ্যাপক ইউনূস তারো আসোকে সফরের আমন্ত্রণ জানান।
জেবিপিএফএল প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেয়া জাপানি আইনপ্রণেতারা বলেন, দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষর বাংলাদেশে আরও জাপানি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
সামনের আগস্ট মাসের মধ্যে আলোচনা শেষ করে সেপ্টেম্বরে দু’দেশের মধ্যে এই অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। স্বাক্ষরিত হলে, জাপানই হবে বাংলাদেশের সাথে ইপিএ স্বাক্ষর করা প্রথম দেশ।
আরও পড়ুন: কৃষির উৎপাদনে জাপানের সহায়তা চাইলেন উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা জাপানি আইন প্রণেতাদের কাছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে তাদের সহায়তা কামনা করেন।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট বিশ্বের অন্যান্য শরণার্থী সংকটের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা, কারণ তারা অন্য কোনও দেশ নয় বরং তাদের নিজেদের বাড়ি-ঘরে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক (সিনিয়র সচিব) লামিয়া মোর্শেদ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
]]>