যুব মহিলালীগ নেত্রীদের নিয়ে জেলা প্রশাসনের দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালন

৩ সপ্তাহ আগে
চাঁপাইনবাবগঞ্জে যুব মহিলা লীগ ও আ.লীগ নেত্রীদের নিয়ে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালন করেছে জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি। এনিয়ে তীব্র সমালোচনা ও দিবস পালনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

সোমবার (০৯ ডিসেম্বর) সকালে দিবসটি উপলক্ষে মানববন্ধন ও আলোচনা সভার আয়োজন করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতিপ্রতিরোধ কমিটি।


মানববন্ধন ও আলোচনা সভায় দেখা যায়, সামনের সারিতেই জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন জেলা ও পৌর যুব মহিলা লীগের কয়েক নেত্রী। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক মো. আব্দস সামাদ, পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম, সিভিল সার্জন ডা. এসএম মাহমুদুর রশীদ, জেলা জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো. ইব্রাহিম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. মসিউল করিম বাবুসহ অন্য অতিথিরা।

আরও পড়ুন: দুদক ও বিচার বিভাগ হাসিনার দাসে পরিণত হয়েছিল: আইন উপদেষ্টা


জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও জেলা দুর্নীতিপ্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে সামনের কাতারে মানববন্ধন ও আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন, জেলা যুব মহিলালীগের প্রচার সম্পাদক বিউটি আক্তার, সদস্য আকসানা খাতুন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর যুব মহিলালীগের সভাপতি জুঁই আক্তারসহ আরও কয়েজন মহিলা ও যুব মহিলালীগ নেত্রী।


সকালে দিবসটি পালনের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বইছে তীব্র সমালোচনার ঝড়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়ক বলেন, অনিয়ম অন্যায় দুর্নীতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে হওয়া দীর্ঘ আন্দোলনের পর পতন হয়েছে চরম দুর্নীতিগ্রস্ত আ.লীগের। অথচ আন্দোলনের পর এমন পরিস্থিতিতে তাদেরকেই নিয়ে দুর্নীতিপ্রতিরোধ দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হচ্ছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতেও আমরা আবারো রাস্তায় নামতে বাধ্য হব।


চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি ওহিদুজ্জামান সাঈম বলেন, ‘বিগত আ.লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের সহযোগিতা করেছে বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন। এমনকি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের দায়ে ইতোমধ্যে আ.লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাদের এসব অনিয়ম-দুর্নীতি, লুটপাট ও বির্তকিত কর্মকাণ্ডের বিচার চলমান রয়েছে। তাই এমন অবস্থায় মহিলালীগ বা যুব মহিলালীগের নেত্রীদের অংশগ্রহণ স্বাভাবিকভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’


এনিয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম বলেন, এটি মেনে নেয়ার মতো বিষয় না। আ.লীগ গত ১৫ বছরে দেশে ব্যাপক দুর্নীতি-লুটপাট করেছে। অথচ দুর্নীতিবিরোধী দিবসের মতো এমন আয়োজনে তাদেরকেই আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আ.লীগের প্রেতাত্মারা এখনও প্রশাসনে বসে তাদের পুনর্বাসনের কাজ করে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আরও পড়ুন: দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে দুদক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : সচিব খোরশেদা


জেলা দুর্নীতিপ্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মসিউল করিম বাবু বলেন, ‘ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত৷ আমরা কখনো এসব আয়োজনে কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের আমন্ত্রণ জানাই না। আন্তর্জাতিক দুর্নীতিপ্রতিরোধ দিবসের মানববন্ধন ও আলোচনা সভার পর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত বেগম রোকেয়া দিবসের অনুষ্ঠানে তারা এসেছিল। সেই সুযোগে হয়ত আমাদের আয়োজনে তারা ঢুকে পড়েছিল। তবে ভবিষ্যতে এসব বিষয়ে আরও সতর্ক থাকব আমরা।’


আগের সরকারের কোনো দোসরদের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি উল্লেখ করে এবিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. আব্দস সামাদ বলেন, ‘জেলা দুর্নীতিপ্রতিরোধ কমিটির সহযোগিতায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অংশগ্রহণকারীদের আমন্ত্রণের বিষয়টিও তারা তদারকি করে। হয়ত অন্য কোনো কাজে এসে এ আয়োজনে ঢুকে পড়েছিল তারা।’ তবে এবিষয়ে আগামীতে আরও বেশি সতর্ক থাকার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন