যাত্রাবাড়ীতে মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের প্রতিরোধ বিজয়কে করে সহজ

৯ ঘন্টা আগে
চব্বিশের জুলাই রাজপথে শুরু হয় এক অভূতপূর্ব ছাত্র-জনতার আন্দোলন। জুলাইয়ের মধ্যভাগে রংপুরে আবু সাঈদসহ বিভিন্ন জেলায় আন্দোলনকারীদের মৃত্যুর প্রতিবাদে জ্বলে ওঠে পুরো দেশ। নির্বাক থাকেনি ইনসাফের বাতিঘর হিসেবে পরিচিত ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। প্রশ্ন তোলে তৎকালীন সরকারের অবস্থান নিয়ে।

দাবি আদায়ের আন্দোলন যখন তীব্র আকার ধারণ করে রাজধানীর অন্যতম প্রবেশদ্বার যাত্রাবাড়ীতে তখন তীব্র লড়াই গড়ে তোলেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। যোগ দেন শিক্ষক ও স্থানীয় আলেম ওলামারা। মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের প্রতিরোধ বিজয়কে করে সহজ। বিনিময়ে প্রাণ দিতে হয়েছে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে। আহত হয়েছেন অগণিত।

 

আন্দোলনকারীরা জানান, আগস্টের শুরুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচি ঠেকাতে প্রশাসন কর্তৃক ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল ও নৌপথ বন্ধের পর নজিরবিহীন ভূমিকায় হাজির হন যাত্রাবাড়ীর মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।

 

অভ্যুত্থানের আগের কয়েক দিন যৌথ বাহিনীর তৎপরতার পরও নানা কৌশলে যাত্রাবাড়ী এলাকা দখলে রাখেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। কেউ ছিলেন পাহারায়, কেউবা যৌথ বাহিনীর সদস্যদের প্রতিহতে। তাদের প্রচেষ্টায় ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী হয়ে হাজার হাজার মানুষ গণভবনের দিকে যেতে সক্ষম হন।

 

তরুণ আলেম প্রজন্ম নামে একটি সংগঠনের দাবি, কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে অভ্যুত্থান পর্যন্ত ৭৭ জন মাদ্রাসাশিক্ষার্থী প্রাণ হারান। 
আন্দোলনকারীদের দাবি, বৈষম্যের পাশাপাশি আলেম সমাজের ওপর দমন-পীড়নও সরকার উৎখাতের আন্দোলনে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও আলেম ওলামাদের যুক্ত করে।

 

আরও পড়ুন: জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবদান

 

তরুণ আলেম প্রজন্ম-২৪ এর নির্বাহী কমিটির সদস্য আশরাফ মাহাদী বলেন, ১৬ জুলাই প্রথম ছয় শিক্ষার্থীকে শহীদ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে যখন হেফাজতের আমির বিবৃতি দেন। এরপর চট্টগ্রাম হাটহাজারি মাদ্রাসা থেকে শিক্ষার্থীদের বড় মিছিল বের হয়। ধীরে ধীরে যাত্রাবাড়ীসহ সব মাদ্রাসাছাত্ররা আন্দোলনে নামেন।’

 

জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করীম বলেন, আন্দোলন যখন শুরু হয়েছে, তখন যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত পুরো এলাকা মাদ্রাসার ছাত্ররা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিলেন। দেখা গেছে অন্য এলাকায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়েছে, কেউ পিছু হটেছে, কিছুক্ষণ পুলিশ দখলে নিয়েছে। কিন্তু এই এলাকা সবসময় মাদ্রাসা ছাত্রদের দখলে ছিল।

 

ইসলামি চিন্তাবিদ মুসা আল হাফিজ বলেন, রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের সবচেয়ে নির্মম শিকার ছিলেন আলেম ওলামারা। তারা জুলমপূর্ণ ব্যবস্থার বিপরীতে একটা বৃহত্তর গণ-অভ্যুত্থানের জন্য অপেক্ষমাণ ছিলেন। যখন জুলাই একটা গণচরিত্র ধারণ করল, তখন মাদ্রাসাছাত্ররা নিজের প্রতিবাদের প্রতিধ্বনি শুনতে পেয়েছিল।।

 

জুলাই শহীদদের আকাঙ্ক্ষার বৈষম্যহীন দেশ গড়তে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান অভ্যুত্থানের শরিক আলেম সমাজের।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন