এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তরুণী কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন। ভুক্তভোগী তরুণী কুমিল্লা জেলার আমতলী এলাকার বাসিন্দা।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ফেসবুকের মাধ্যমে রাফার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। রাফা তার ‘Avoure Rafa’ আইডি থেকে ওই তরুণীর আইডিতে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠান। এরপর তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং একপর্যায়ে রাফা ওই তরুণীর মোবাইল ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর সংগ্রহ করেন। এরপর তিনি ওই তরুণীকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে ওই তরুণী সরল বিশ্বাসে তাতে রাজি হয়ে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করেন।
ওই তরুণী এজাহারে আরও উল্লেখ করেছেন, রাফা তাকে বারবার যশোরে আসার জন্য বললে তিনি গত বছরের ৫ অক্টোবর ঢাকা থেকে যশোরে আসেন। ওইদিন বিকেলে যশোর মনিহার সিনেমা হলের সামনে থেকে রাফা তাকে যশোর আইটি পার্কে নিয়ে যান। সেখানে আইটি পার্কের পঞ্চম তলার একটি কক্ষে সন্ধ্যা ৬টার দিকে ওই তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। শুধু তাই নয়, রাফা সুকৌশলে তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করেন। পরবর্তীতে ওই তরুণীকে জানানো হয় যে তার কাছে কিছু অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিও আছে এবং ওই তরুণী তার কথা না শুনলে সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবেন।
আরও পড়ুন: সারাদেশ অচলের হুঁশিয়ারি ছাত্রদল সভাপতির
ভিডিও ফাঁসের হুমকির মুখে অভিযুক্ত রাফা ওই তরুণীর কাছে তার ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ২ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ভিডিও প্রকাশের হুমকি দেন। ভয়ে ওই তরুণী রাফার দেয়া ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, যশোর শাখার একটি অ্যাকাউন্টে ২ লাখ টাকা দেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এবং বিকাশের মাধ্যমে আরও প্রায় ৩ লাখ টাকা প্রদান করেন ওই তরুণী।
এছাড়াও, ওই তরুণী সরাসরি রাফার হাতে আরও ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা দেন। সব মিলিয়ে রাফা ওই তরুণীর কাছ থেকে মোট ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
ওই তরুণী জানান, গত ২৩ মে রাত সাড়ে ৮টায় তার বান্ধবীকে নিয়ে রাফার শংকরপুরের বাড়িতে যান এবং তার বাবা-মায়ের কাছে সম্পর্কের বিষয়ে বিস্তারিত জানান। রাফার বাবা-মা সম্পর্ক মেনে নেওয়ার কথা বললেও, রাফা তার বন্ধুদের মাধ্যমে ওই তরুণীকে মোবাইল ফোনে হুমকি দেন এবং তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাইফুল ইসলাম রাফা বলেন, ‘ওই মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু আমাদের মধ্যে কোনো অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ঘটনা ঘটেনি। আর আমি কখনও তার কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা নেয়নি। আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নষ্ট করার জন্য সে এইসব করছে।’
আরও পড়ুন: পুলিশের কাছ থেকে ছাত্রদল নেতাকে ছিনতাই, আটক ৬
রাফা আরও বলেন, ‘সম্প্রতি অন্য একটা ছেলের সাথে ওই মেয়ের সম্পর্কের কথা আমি জানতে পারি। এরপর থেকে আমি তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করি। সেজন্য আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে।’
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসনাত জানান, অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।