বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের শোকজ জবাবের শুনানি শেষে সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন, সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট সৈয়দ কবির হোসেন জনি, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম রফিক ও অ্যাডভোকেট তরফদার আব্দুল মুকিত।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক এমএ গফুর জানান, যশোর আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেন জনির কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় ইমরান হাসান টুটুল জমি বিক্রি করেন। জমি রেজিস্ট্রির আগে সমুদয় টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সুচতুর জনি রেজিস্ট্রর আগে ১০ লাখ টাকা দিয়ে বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে ঘোরাতে থাকেন। পরবর্তীতে টুটুল বহু দেনদরবার করে আরও ১৭ লাখ টাকা আদায় করেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে টুটুলকে হুমকি দিতে থাকেন আইনজীবী জনি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে টুটুল পাওনা টাকা আদায়ে আইনজীবী সমিতিতে জনির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন।
আরও পড়ুন: নিজের বিচারের দাবিতে কলেজশিক্ষকের অবস্থান কর্মসূচি
সমিতির সভায় অভিযোগের ওপর আলোচনা শেষে সমিতির সাবেক সভাপতি দেবাশীষ দাসকে আহ্বায়ক ও আরএম মঈনুল হক খান ময়নাকে সদস্য সচিব করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি বাদী ও বিবাদীদের বক্তব্য গ্রহণ করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে সৈয়দ কবির হোসেন জনিকে অভিযুক্ত করে সমিতিতে প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কমিটি। সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে সৈয়দ কবির হোসেন জনিকে শোকজ করা হয়েছিল। শো-কজের জবাব সন্তোষ জনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুন্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জনিকে বুধবার তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
অপর দিকে, অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং কর্পোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিলেন যশোর আইনজীবী সমিতির সদস্য আব্দুর রাজ্জাককে। ২০১৯ সাল থেকে ২২ সাল পর্যন্ত আব্দুল রাজ্জাক ৮টি চেকের মামলা পরিচালনা করেছিলেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকুলে যাওয়ার পর ৮ টি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫শ’ ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আব্দর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থকেন। একপর্যায়ে চলতি বছরের ৪ জুন আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দিয়েছিলেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং কর্পোরেশনে ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল ওহাব গত ২৮ জুলাই যশোর আইনজীবী সমিতির সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছিলেন। এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় সদস্য আব্দুর রাজ্জাকে শো-কজ করে আইনজীবী সমিতি। শো-কজের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: যশোরে সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতাদের সঙ্গে পুলিশ সুপারের মতবিনিময়
এছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আব্দুল মুকিত সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুন্ন হয়। এ কারণে ওই দুইজনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।