যন্ত্রের টার্মিনাল নয়, মানুষেই এগিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের জিসিবি

৫ দিন আগে
অত্যাধুনিক গ্যান্ট্রি ক্রেনের চিটাগাং কনটেইনার টার্মিনালে (সিসিটি) এবং নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালকে (এনসিটি) টেক্কা দিয়ে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে এগিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের ম্যানুয়েল পদ্ধতির টার্মিনাল জেনারেল কার্গো বার্থ (জিসিবি)। জাহাজে থাকা ক্রেন এবং শ্রমিকদের হাতেই প্রতিদিন গড়ে সাড়ে সাত শতাধিক কনটেইনার হ্যান্ডলিং করছে সবচেয়ে পুরাতন এই টার্মিনাল। অথচ বাকি দুইটি টার্মিনালের বিপরীতে সুযোগ-সুবিধায় জিসিবি টার্মিনাল অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের জেনারেল কার্গো বার্থে (জিসিবি) জাহাজের সারি। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত এই টার্মিনালের জাহাজে থাকা ক্রেন এবং শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে জাহাজ থেকে যেমন আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনার নামিয়ে আনছে, তেমনি জাহাজে তুলে দিচ্ছে রফতানি পণ্য।

 

কনটেইনার রাখার নির্ধারিত ইয়ার্ড কিছুটা দূরবর্তী হওয়ায় জাহাজে থেকে নামানো কনটেইনার লরিতে করেই আনা-নেয়া করতে হয় বলে কিছুটা সময় ক্ষেপণ হয় এখানে।

 

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হার্বার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আবদুল্লাহ বলেন, জিসিবিতে জাহাজগুলোর নিজস্ব যে ক্রেন থাকে, সেগুলো ব্যবহার করে। পাশাপাশি বন্দর সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মী ও শ্রমিকরা ম্যানুয়ালি কাজ করে।

 

আরও পড়ুন: বে টার্মিনাল-মাতারবাড়ি / দক্ষিণ এশিয়ার বিজনেস হাব হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর!

 

বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, ১৪টি অত্যাধুনিক গ্যান্ট্রি ক্রেনের নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল এবং ৪টি গ্যান্ট্রি ক্রেনের চিটাগাং কনটেইনার টার্মিনাল প্রতি ঘণ্টায় ১৮ থেকে ১৯টি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করছে। এক্ষেত্রে জিসিবিও পিছিয়ে নেই। বরং সাম্প্রতিক সময়ে বন্দরের পক্ষ থেকে তদারকি জোরদার করায় কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছে জিসিবি টার্মিনাল।

 

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, সিসিটি-এনসিটিতে যে পরিমাণ কনটেইনার লোডিং-আনলোডিং হচ্ছে, তাতে আগে জিসিবি অনেক পিছিয়ে ছিল। তবে বর্তমানে জিসিবিও এই কাজে অনেক এগিয়ে গেছে।

 

তবে জিসিবি বার্থ অপারেটরদের দাবি, স্বাধীনতার পর এই টার্মিনাল দিয়েই বন্দরের কার্যক্রম শুরু হলেও সময়ের সঙ্গে আধুনিক হতে পারেনি। এক্ষেত্রে ষ্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ার, এমপটি হ্যান্ডলারের মতো যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা হলে জিসিবির সক্ষমতা দ্বিগুণ হয়ে উঠবে।

 

আরও পড়ুন: কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে সক্ষমতা বাড়াতে লালদিয়ার চরেই ভরসা খুঁজছে চট্টগ্রাম বন্দর

 

চট্টগ্রাম বন্দরের বার্থ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ফজলে একরাম চৌধুরী বলেন, প্রোডাক্টিভিটির দিক থেকে জিসিবি সিসিটি-এনসিটি থেকে অনেক এগিয়ে আছে। এখানে শ্রমিকরা প্রশিক্ষিত, সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে কাজ করা হচ্ছে। সিসিটি-এনসিটির যান্ত্রিক উপকরণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তারা টিকে আছে।

 

কনটেইনার ইয়ার্ডকে জাহাজের কাছাকাছি অবস্থানে নিয়ে আসার দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, জিসিবির তেমন ভালো যন্ত্রপাতি নেই। যাও রয়েছে, সেগুলো জাহাজের কাছাকাছি যেতে পারে না। দূর থেকে পরিচালনা করতে হয়।

 

উল্লেখ্য, বিশাল আকৃতির চারটি জাহাজ ভেড়ানোর সক্ষমতা থাকা এনসিটি বছরে ৪৪ শতাংশ, ২টি জাহাজের সক্ষমতা সম্পন্ন সিসিটি ১৯ শতাংশ এবং ৩টি জাহাজ ভেড়ানোর সক্ষমতায় ৩৭ শতাংশ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করছে জিসিবি। আর চট্টগ্রাম বন্দর বছরে হ্যান্ডলিং করছে ৩২ লাখের বেশি।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন