শুক্রবার (২৭ জুন) রাতে দুর্ঘটনার পর জাহাজ মাস্টার মো. বেল্লাল হোসেন থানায় সাধারণ ডায়েরির (জিডি) চেষ্টা করলেও শুরুতে মোংলা থানা তা গ্রহণ না করায় পরে দাকোপ থানায় জিডি করতে হয়েছে।
জাহাজটির মাস্টার জানান, ভারতের কলকাতার ভেন্ডেল থেকে ৯১৪ মেট্রিক টন ফ্লাইঅ্যাশ (সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল) বোঝাই করে ঢাকার মেঘনা ব্রিজ সংলগ্ন হোলসিম সিমেন্ট ফ্যাক্টরির উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল এমভি মিজান-১। মোংলায় যাত্রা বিরতির সময় হঠাৎ করেই বিপরীত দিক থেকে আসা খালি লাইটার জাহাজ এমভি কে আলম গুলশান-২ ধাক্কা দেয়। এতে এমভি মিজান-১ এর তলা ফেটে মুহূর্তেই জাহাজটি ডুবে যায়।
দুর্ঘটনার সময় জাহাজে থাকা ১০ নাবিক সাঁতরে প্রাণে রক্ষা পেলেও তাদের মালামাল, নগদ টাকা কিছুই রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। তারা বর্তমানে মোংলা বন্দরের একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছেন।
জাহাজ মাস্টার বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘মোংলা থানায় জিডি করতে গেলে পুলিশ জানায় এটি তাদের আওতাধীন এলাকা নয়। পরে দাকোপ থানায় আমরা জিডি করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডুবন্ত জাহাজের মালামাল নদীতে ভেসে গেছে এবং জাহাজটি তলা ফেটে দুই ভাগ হয়ে গেছে।’
আরও পড়ুন: ৯১৪ মেট্রিক টন ফ্লাইঅ্যাশ নিয়ে কার্গোডুবি, ১০ নাবিক জীবিত উদ্ধার
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, মূল চ্যানেলে কোনো সরাসরি প্রভাব না পড়লেও দুর্ঘটনাস্থলে মার্কিং দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
মোংলা বন্দরের উপ-পরিচালক মো. মাকরুজ্জামান বলেন, ‘হারবার বিভাগের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং দুই পক্ষকে দ্রুত জাহাজ উদ্ধার করার মৌখিক তাগিদ দেয়া হয়েছে। রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে মালিক পক্ষকে চিঠি পাঠিয়ে ১৫ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উদ্ধার না হলে বন্দরের পক্ষ থেকেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কার্গো জাহাজটি মূল চ্যানেল থেকে কিছুটা দূরে থাকায় বন্দরের জাহাজ চলাচলে কোনো বিঘ্ন ঘটেনি। বন্দরের মেইন নেভিগেশন রুট ঝুঁকিমুক্ত রয়েছে।’
উল্লেখ্য, দুর্ঘটনার পর দুই জাহাজের মালিকপক্ষের মধ্যে যোগাযোগ চলছে এবং আপস-মীমাংসার চেষ্টার কারণে এখনো মামলা হয়নি বলে জানা গেছে। তবে বিশাল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি এবং পরিবেশগত ঝুঁকি মাথায় রেখে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।