অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে কলম্বিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব-২০ দল। আগামীকাল (২০ অক্টোবর) ভোরে ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ মরক্কো। সেমিফাইনালে আলবিসেলেস্তেদের একমাত্র গোলটি করেছিলেন মাতেও সিলভেত্তি। ১৯ বছর বয়সী সিলভেত্তি ইন্টার মায়ামিতে খেলেন স্বদেশি মহাতারকা লিওনেল মেসির সতীর্থ হিসেবে। সেমিফাইনালের পর মেসি নিজেই তার এই তরুণ সহখেলোয়াড়কে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন।
দিয়েগো প্লাসেন্তের অধীনে এই আর্জেন্টিনা দলে সিলভেত্তি এক চমকের নাম। ইন্টার মায়ামির এই স্ট্রাইকার বেঞ্চ থেকে আসর শুরু করে এখন বিশ্বকাপের বড় তারকা বনে গেছেন। মেসির মতো সিলভেত্তির জন্মও আর্জেন্টিনার রোসারিওতে। টুর্নামেন্টে সম্ভাব্য ৫৪০ মিনিটের মধ্যে মাত্র ১৪৭ মিনিট খেলার সুযোগ পেয়েছেন তিনি, অর্থাৎ প্রায় দেড় ম্যাচের সমান। তবে, এই অল্প সময়েই তিনি করেছেন তিনটি গোল, যার সবকটি নকআউট পর্বে। একটি অ্যাসিস্টও আছে তার নামের পাশে—ইয়ান সুবিয়াব্রের জন্য কিউবার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে। সেই ম্যাচে ৩-১ ব্যবধানে জয় পায় আর্জেন্টিনা। সেই ম্যাচে সিলভেত্তি শেষ ১০ মিনিটের জন্য বদলি হিসেবে নেমেছিলেন।
আরও পড়ুন: ১৮ বছর পর ফাইনালে আর্জেন্টিনা, সবশেষ শিরোপাজয়ী দলের কে কোথায়?
রাউন্ড অব ১৬-এ নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ৪-০ ব্যবধানে জয়ের ম্যাচেও সিলভেত্তি চতুর্থ গোলটি করেন। সেই ম্যাচেও লেভারকুজেনের স্ট্রাইকার সারকোর জায়গায় বদলি হিসেবে নেমে ২৭ মিনিট খেলেন। এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে মেক্সিকোর বিপক্ষে ২-০ জয়ে আবার গোল করেন, এইবার তিনি পুরো দ্বিতীয়ার্ধ খেলেন এবং অবশ্যই, সারকোর বদলি হিসেবে।
মেসির সঙ্গে মাতেও সিলভেত্তি। দুজনই এখন ইন্টার মায়ামিতে সতীর্থ। ছবি: এক্স
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, দুর্দান্ত ফর্ম থাকা সত্ত্বেও মাতেও তিয়াগো (সিলভেত্তির ডাকনাম), কাকতালীয়ভাবে মেসির দুই বড় ছেলের নামের সঙ্গে মিলে যায়—এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপে কোনো ম্যাচেই মূল একাদশে ছিলেন না। অনূর্ধ্ব-২০ দলের ক্যারিয়ারে মাত্র দুটি ম্যাচে শুরুর একাদশে ছিলেন তিনি, প্রীতি ম্যাচে—২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে যথাক্রমে প্যারাগুয়ে (যেখানে তিনি গোল করেন) এবং উজবেকিস্তানের বিপক্ষে। চলতি বছরের শুরুতে অনূর্ধ্ব-২০ দক্ষিণ আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশিপে তো তাকে স্কোয়াডেই রাখা হয়নি।
আরও পড়ুন: ৪০০ গোল পূর্ণ করে কেন বললেন–আরও আসছে
তবুও, নিউওয়েলসের যুব দলের (মেসিরও ফুটবল যাত্রা শুরু যে ক্লাবে) হয়ে তার পারফরম্যান্স নজর কাড়ে। নিউওয়েলসের সিনিয়র দলে ৩৭ ম্যাচে ৬ গোল ও ২ অ্যাসিস্ট করার পর ইন্টার মায়ামি তাকে দলে ভিড়ায়। সেই সুযোগে প্লাসেন্তে তাকে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে রাখেন এবং খেলার সুযোগ দেন। ১৯ বছর বয়সী এই তরুণ তা দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছেন। এখন তিনি আলবিসেলেস্তের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা। ৪ গোল করে যৌথভাবে শীর্ষে আছেন মাহের কার্রিজো ও আলেখো সারকো ।
যদি আগামীকাল ভোরের ফাইনালে মরক্কোর বিপক্ষে সিলভেত্তি গোল করতে পারেন, তবে সেটি মেসির সঙ্গে এক অবিশ্বাস্য মিল হবে। আর্জেন্টাইন তারকা ২০০৫ সালের অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে ফাইনালসহ নকআউট পর্বের প্রতি ম্যাচে গোল করেছিলেন। সেখানে তিনি যথাক্রমে শেষ ষোলো ও ফাইনালে কলম্বিয়া ও নাইজেরিয়ার বিপক্ষে গোল করেছিলেন। তাই মাতেও তিয়াগোর জন্য এখন বাকি আছে শুধু একটিই বিষয়—আফ্রিকান প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ফাইনালে গোল করা। সে কি পারবে?

৪ সপ্তাহ আগে
৭








Bengali (BD) ·
English (US) ·