ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘুম নিয়ে নতুন একটি গবেষণা করেছেন গবেষকরা। তারা বলছেন, ঘুমানোর সময় যদি সেখানে আলো থাকে তাহলে তা মস্তিষ্কে চাপ সৃষ্টি করে। এটি রক্তনালীর প্রদাহ তৈরি করতে পারে যা পরে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মানুষের ঘরে বেশি আলো থাকে ১০ বছর পর তাদের মধ্যে ১৭% হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এটা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, রাতের অন্ধকারে ঘুমানো আমাদের জন্য সবচেয়ে ভালো।
আসুন এক নজরে জেনে নিই, কৃত্রিম আলো, ঘুম এবং শরীরের ওপর নেতিবাচক কিছু প্রভাব সম্পর্কে-
১। রাতে কৃত্রিম আলোর উপস্থিতি বেশি থাকলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। আলোর মাত্রা প্রতি ১ স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশন (এসডি) বাড়ানোর ফলে পরবর্তী ৫ বছরে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ৩৫% এবং ১০ বছরে ২২% বেড়ে যায়।
২। যেসব এলাকায় ট্রাফিকের শব্দ বা নিম্নবিত্ত মানুষের বসবাস সেসব এলাকার মানুষদের মধ্যে এই ঝুঁকি আরও বেশি। এই গবেষণাটি ২০২৫ সালে আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন (AHA) সায়েন্টিফিক সেশনসে উপস্থাপন করা হয়, তবে এখনো এটি বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশিত হয়নি।
৩। ২০২২ সালের ৪৬৬ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির উপর করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা বেশি আলোর মধ্যে ঘুমায়, তাদের হার্ট রেট বেড়ে যায়, গভীর ঘুম কমে যায় এবং তাদের ইনসুলিন ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে।
৪। রাতে ঘুমানোর সময় ঘরে আলো থাকলে শরীরের মেলাটোনিন উৎপাদনও বাধাগ্রস্ত হয়। এটি আমাদের ঘুমের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর অভাবে ঘুম ভালো হয় না এবং শরীরের উপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

ঘুমের পরিবেশ আরও ভালো করার উপায়
১. জানালা ভালো করে ঢেকে রাখা: রাতে আলো যাতে না আসতে পারে সেজন্য জানালাগুলো পর্দা দিয়ে ভালোভাবে ঢেকে রাখা যেতে পারে। ব্ল্যাকআউট পর্দার ব্যবহার করলে ঘর পুরোপুরি অন্ধকার হয়ে যাবে যা ঘুমের জন্য উপকারী।
২. দরজার ফাঁক বন্ধ করা: দরজার নিচ দিয়ে যদি কোনো আলো ঢোকে, তাহলে তোয়ালে বা অন্য কিছু দিয়ে ফাঁকাটি বন্ধ করে দিলে বাইরে থেকে কোনো আলো ঘরে আসবে না।
৩. চোখে মাস্ক ব্যবহার করা: অনেকে ঘুমানোর সময় চোখে মাস্ক ব্যবহার করে থাকে। এটি ঘরকে পুরোপুরি অন্ধকার মনে করতে সাহায্য করে এবং ঘুম ভালো করে।
আরও পড়ুন: পায়ের ফাঁকে বালিশ দিয়ে ঘুমানো ভালো নাকি খারাপ?
৪. মুভমেন্ট সেন্সর নাইটলাইট ব্যবহার করা: রাতে আলোর প্রয়োজন হলে মুভমেন্ট সেন্সরযুক্ত নাইটলাইট ব্যবহার করা ভালো। এতে আলো শুধু তখনই জ্বলবে যখন কেউ উঠবে বা নড়াচড়া করবে। ফলে, ঘুমের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় আলো ঘুমে বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না।
তাই সুস্থ থাকার জন্য রাতে অন্ধকার ঘরেই ঘুমানোর চেষ্টা করুন। এতে ঘুমও ভালো হবে আবার হার্টও থাকবে সুস্থ।
আরও পড়ুন: গভীর ঘুম আনে ৩ খাবার!
]]>
৩ দিন আগে
২






Bengali (BD) ·
English (US) ·