চলছে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদের ভরা মৌসুম। রাজবাড়ী জেলার পাশ দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা ও গড়াই নদীর চর ও উঁচু জমিতে তাই মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কেউ মুড়িকাটা পেঁয়াজের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন, কেউ রোপণ করছেন, আবার কেউ জমিতে সেচ দিচ্ছেন। যারা আগেভাগে আবাদ করেছিলেন, তারা চারা গাছের যত্ন নিচ্ছেন। কেউবা চারায় কীটনাশক দেয়ার কাজ সেরে নিচ্ছেন।
আগাম মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণে এ মুহূর্তে কৃষকদের ব্যস্ততা বৃদ্ধিও বীজ পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও স্বস্তিতে নেই তারা। তাদের অভিযোগ, বাজারে সারের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে অতিরিক্ত দাম আদায় করছেন বিক্রেতারা। এছাড়াও রয়েছে বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির আশঙ্কা।
আরও পড়ুন: আমনের ক্ষেতে মাজরা পোকা-ব্লাস্টের প্রকোপ, ফলন নিয়ে শঙ্কায় রংপুরের চাষিরা
কালুখালী উপজেলার হরিণবাড়িয়া চরের পেঁয়াজ চাষি আলম মাতুব্বর বলেন, গত বছরের থেকে চলতি বছর গুটি পেঁয়াজের দাম কিছুটা কম। তবে সার-কীটনাশকের দাম বস্তাপ্রতি বেড়েছে ৫ থেকে ৭শ টাকা। তার পরও ডিলার ঠিকমতো সার দিচ্ছে না।
চাষি ইয়াকুব আলী বলেন, গত বছর তো পেঁয়াজে লোকসান গেছে। বিঘায় খরচ পড়েছিল প্রায় লাখ টাকা। এবার গুটি পেঁয়াজের দাম কম, তবে সার পাওয়া যায় না সময় মতো। তারপরও দাম বৃদ্ধি। এবারও উৎপাদন খরচ আগের মতোই হবে। পেঁয়াজের দাম ৩ হাজারের কম হলে লোকসান যাবে।
চাষি রহমত আলী শেখ বলেন, সার, সেচ, চাষ, শ্রমিক খরচ সব আগের মতোই আছে। খালি এ বছর গুটি পেঁয়াজের দামটা কম। গত বছর ১০-১৫ হাজার টাকা মণ কেনা লাগছিল, এ বছর ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা মণ। তবে বাজারে সার কম পাওয়া যাচ্ছে।
তিন মাস পর বাজারে উঠবে মুড়িকাটা পেঁয়াজ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে, জেলায় চলতি বছর ফসলটির আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা কৃষি বিভাগের। রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ড. মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ ও অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে আগাম মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ শুরু করেন চাষিরা।
আরও পড়ুন: নদীর বুকে শত বছরের ঐতিহ্য, বৈঠাকাটা বাজারে নৌকাতেই চলে বেচাকেনা
তিনি আরও বলেন, মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণের ৯০ দিনের মধ্যে ফলন তোলা যায়। ফলে লাভের আশায় চাষিরা এ জাতের পেঁয়াজের আগাম চাষ করেন। কিন্তু এবার সেপ্টেম্বর মাসের শেষ ও অক্টোবরের শুরুতে কয়েক দফায় বৃষ্টির কারণে কিছুটা দেরিতে পেঁয়াজ আবাদ শুরু হয়েছে।
সারের দাম নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সারের দামের ব্যাপারে আমরা সচেতন আছি। কোথাও কোথাও দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে, তবে আমরা কৃষকদের বলছি, সরকারি দামে সার নিতে হবে। সে সঙ্গে ডিলারদেরও কড়া নজরে রেখেছি যেন কৃষক সঠিক দামে সব উপকরণ পেয়ে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষাবাদ করতে পারেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, পেঁয়াজ উৎপাদনে দেশের মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে রাজবাড়ী জেলা। সারাদেশের মোট উৎপাদিত পেঁয়াজের ১৪ ভাগ উৎপাদন হয় এ জেলায়। চলতি বছর জেলায় ৫ হাজার ৮৭৫ হেক্টর জমিতে প্রায় ৯৩ হাজার মেট্রিক টন মুড়িকাটা পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
]]>
৩ সপ্তাহ আগে
৪







Bengali (BD) ·
English (US) ·