মুন্সীগঞ্জের পানি শোধনাগার চ্যানেলে চর, চ্যালেঞ্জের মুখে ৩৪৫০ কোটি টাকার প্রকল্প

৩ সপ্তাহ আগে
মুন্সীগঞ্জের যশলদিয়ার পদ্মা পানি শোধনাগারের চ্যানেলে চর জেগে উঠেছে। শুষ্ক মৌসুম শুরুর আগে চ্যানেল বন্ধ হয়ে পড়ায় পানি সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে ৩ হাজার ৪৫০ কোটি টাকার এই প্রকল্প এখন বড় চ্যালেঞ্জের মুখে।

আগামী অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত টানা সাত মাস শুষ্ক মৌসুম চলবে। এ সময় রাজধানীতে পানি সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পরিস্থিতি মোকাবেলায় চ্যানেল সচল রাখতে ও চর অপসারণে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওয়াসা বিআইডব্লিউটিএকে এ বিষয়ে জরুরি ব্যবস্থা নিতে পত্র দিয়েছে। তবে বিআইডব্লিউটিএ পাল্টা চিঠিতে জানিয়েছে, নৌচলাচলের জন্য এই চ্যানেল সচল রাখা জরুরি নয়। তাই অর্থ ব্যয় করতে তারা অনিহা প্রকাশ করেছে।

 

তবে তারা জানিয়েছে, চ্যানেলে কত পরিমাণ পলি জমেছে তা জরিপ করে দেখা দরকার এবং এজন্য ওয়াসার কাছে প্রায় চার লাখ টাকা দাবি করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা হয়েছে, জরিপ শেষে এই বালু নিলামে বিক্রি করেও চ্যানেল সচল রাখা যেতে পারে। তবে ওয়াসা বলছে, নৌচলাচল এই চ্যানেল দিয়েই হতো এবং এটি সচল রাখা অত্যন্ত জরুরি।

 

বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক (জরিপ) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘অপসারণের আগে জরিপের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে আমরা ওয়াসাকে পত্র দিয়েছি। নদীর তলদেশের অবস্থা জানার জন্য এই জরিপ করা জরুরি। তবে প্রায় দুই সপ্তাহ আগে পাঠানো ওই পত্রের উত্তর এখনো ওয়াসা দেয়নি।’

 

আরও পড়ুন: মুন্সীগঞ্জে অবৈধ বালু উত্তোলনে বাধা, সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত ৩

 

পদ্মা পানি শোধনাগারের নির্বাহী প্রকৌশলী গাজী আসরিব বিন সালাম বলেন, ‘বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ২৫ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু চ্যানেলে চর পড়ায় আগামী শুষ্ক মৌসুমে পানি উত্তোলন কঠিন হয়ে পড়বে।’

 

ওয়াসা জানায়, ২০১৯ সালে চালু হওয়া যশলদিয়া শোধনাগার প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৩০ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করেছে। প্রকল্পটির সক্ষমতা ৪৫ কোটি লিটার হলেও নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ না হওয়ায় তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। রাজধানীতে প্রতিদিন ২৯০ কোটি লিটার পানির প্রয়োজন হয়। এর মধ্যে পদ্মা শোধনাগার একটি বড় অংশ সরবরাহ করে। এছাড়া সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার প্রতিদিন ৪৫ কোটি লিটার পানি দেয়, তবে শীতলক্ষ্যার ময়লা পানি শোধন করে সরবরাহ করায় সেটি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

 

ঢাকা ওয়াসার একাধিক সূত্র জানিয়েছে, অস্থায়ী চর ও বালু অপসারণে তাদের পর্যাপ্ত অর্থ নেই। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চাওয়া হতে পারে, তবে তা সময়সাপেক্ষ। তাই জরুরি ভিত্তিতে বিআইডব্লিউটিএর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

 

পদ্মাপাড়ের বাসিন্দা লিপু খান বলেন, ‘যশলদিয়ার পাশ দিয়ে প্রবাহিত অংশটিই ছিল পদ্মার মূল চ্যানেল। এবার এমনভাবে চর পড়েছে যে শুষ্ক মৌসুমে চ্যানেল সচল রাখা কঠিন হবে। নিলামে বালু বিক্রি করা হলে লুটপাট ও নদীর তলদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এতে নদীর গতিপথ পাল্টে ভয়াবহ ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন