খবরে বলা হয়েছে, বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) জানিয়েছে, বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে রাখাইন রাজ্যে তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা রামরি দ্বীপের কিয়াউক নি মাও নামে একটি গ্রামে বিমান হামলার ঘটনা ঘটে। সেনাবাহিনী আগে থেকে আক্রমণের ঘোষণা দেয়নি।
আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইং থুখা জানান, যুদ্ধবিমান থেকে বোমা হামলা চালানো হয়। এতে আগুন লেগে ৫ শতাধিক বাড়িঘর পুড়ে গেছে। তিনি আরও জানান, প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ৪০ বেসামরিক মানুষ নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন।
খাইং থুখা আরও বলেন, ‘নিহতরা সকলেই বেসামরিক নাগরিক। হতাহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে।’ তবে গ্রামটিকে কেন লক্ষ্যবস্তু করা হল তা স্পষ্ট নয়। স্থানীয় একটি দাতব্য গোষ্ঠীর নেতা এবং স্বাধীন গণমাধ্যমও বিমান হামলা এবং হতাহতের খবর জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: রাখাইনে জান্তার গুরুত্বপূর্ণ সেনা সদর দফতর দখল আরাকান আর্মির
মিয়ানমারে ২০২১ সালে বেসামরিক সরকার উৎখাত করে সামরিক শাসন জারি হয়। এরপর থেকেই ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভ শেষ পর্যন্ত সশস্ত্র বিদ্রোহে রূপ নেয়। জান্তাবিরোধী থ্রি বাদারহুড অ্যালায়েন্সের একটি হল আরাকান আর্মি।
২০২৩ সালের অক্টোবরে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু করে সশস্ত্র বাহিনীটি। এতে চীন সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় উল্লেখযোগ্য সাফল্য পায় তারা। গোষ্ঠীটি সম্প্রতি রাখাইনের বেশিরভাগ অঞ্চলসহ বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমারের সীমান্তের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
গত বছরের মার্চ মাসে মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুন থেকে ৩৪০ কিলোমিটার (২১০ মাইল) উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত রাখাইনের রামরি দখল করে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি। হারানো এসব এলাকা পুনরুদ্ধারে বিমান হামলা জোরদার করেছে সরকারি বাহিনী।
আরও পড়ুন: রাখাইনের আরও একটি শহর দখল আরাকান আর্মির
রাখাইনের পূর্ব নাম আরাকান। ২০১৭ সালে এই অঞ্চলে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংস সামরিক অভিযান ও গণহত্যার মুখে প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। অঞ্চলটির বেশিরভাগই এখন বিদ্রোহী আরাকান আর্মির দখলে। এ অঞ্চলকে কেন্দ্র করে একটি ‘স্বাধীন রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠা করতে চায় গোষ্ঠীটি।
]]>