মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরের জেনারেল অ্যাসেম্বলি হলে আয়োজিত রোহিঙ্গা বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি সংকট নিরসনে ৭ প্রস্তাব তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের উৎপত্তি মিয়ানমার থেকে। এর সমাধান সেখানেই আছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন অবিলম্বে বন্ধ করতে মিয়ানমার ও আরাকান সেনাবাহিনীর ওপর কার্যকর চাপ সৃষ্টি করতে হবে এবং রাখাইনে তাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য কাজ শুরু করতে হবে।
এ সময় রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে অধ্যাপক ইউনূস ৭টি প্রস্তাব তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টা তার প্রস্তাবে বলেন, ‘প্রথমত, রাখাইনে যুক্তিসঙ্গত স্থিতিশীলতার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য একটি বাস্তব রোডম্যাপ প্রণয়ন করা; দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ করতে মিয়ানমার ও আরাকান সেনাবাহিনীর ওপর কার্যকর চাপ প্রয়োগ করা এবং সম্প্রতি যারা বাংলাদেশে এসেছেন এবং যারা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন তাদের ফেরত নেয়ার মাধ্যমে টেকসই প্রত্যাবাসন শুরু করা; তৃতীয়ত, রাখাইনকে স্থিতিশীল করতে আন্তর্জাতিক সমর্থন জোগাড় করা এবং স্থিতিশীলতা পর্যবেক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক বেসামরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করা; চতুর্থত, রাখাইন সমাজ ও শাসনে রোহিঙ্গাদের টেকসই সংহতকরণে আস্থা তৈরির পদক্ষেপে সহায়তা করা; পঞ্চমত, যৌথ প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনার সম্পূর্ণ তহবিলের জন্য দাতাদের সহায়তাগুলো একত্রিত করা; ষষ্ঠত, জবাবদিহিতা এবং পুনরুদ্ধারমূলক ন্যায়বিচার অনুসরণ করা এবং সপ্তমত, মাদকদ্রব্য সংশ্লিষ্ট অর্থনীতি ধ্বংস করা এবং আন্তঃসীমান্ত অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করা।’
আরও পড়ুন: জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে রেমিট্যান্স: প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরার জন্য আর অপেক্ষা করতে পারবে না বিশ্ব। আজ, আসুন আমরা এই সংকট সমাধানের জন্য একসঙ্গে কাজ করার শপথ নেই। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২৫ আগস্ট কক্সবাজারের রোহিঙ্গা বিষয়ে আঞ্চলিক সম্মেলনেও প্রধান উপদেষ্টা সংকট নিরসনে সাত দফা প্রস্তাব দিয়েছিলেন।