বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল পৌনে ৪টার দিকে এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে প্রবেশ করে বানরটি পাশের একটি বাঁশঝাড়ে আশ্রয় নেয়। বৃষ্টিপাত কমে আসার পর বিদ্যুতের তার ভর করে অন্যত্র যাওয়ার চেষ্টা করলে বানরটি বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে পড়ে। এতে দগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই ধীরে ধীরে প্রাণ হারায় এ বিরল প্রাণীটি।
বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি শ্রীমঙ্গল পল্লী বিদ্যুৎ অফিস এবং উপজেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তাকে ফোন করেন। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে বানরটিকে উদ্ধারের অনুরোধ জানানো হলেও কেউ কোনো সহযোগিতা করেননি। বিদ্যুৎ অফিসের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা ‘মিটিং চলছে’ বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। প্রায় চল্লিশ মিনিট তারে ঝুলে থেকে বানরটি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় শুকনো বাঁশ ব্যবহার করে বানরটিকে উদ্ধার করা হয়। উপজেলা পশু হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বানরটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: শ্রীমঙ্গল থেকে বিরল প্রজাতির লজ্জাবতী বানর উদ্ধার
স্বপন দেব আরও জানান, বিদ্যুৎতে আটকে থাকার কারণে বানরের দুটি হাত-পা পুড়ে যায় এবং মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। ঘটনাটি অবহেলা ও দায়সারা মনোভাবের কারণে ঘটেছে বলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. কাজী নাজমুল হক জানান, মৃত লজ্জাবতী বানরটিকে ময়নাতদন্তের জন্য জানকিছড়া রেসকিউ সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে তাকে মাটিচাপা দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, লজ্জাবতী বানর বাংলাদেশের একটি বিরল ও বিপন্ন প্রজাতি। খাদ্যের অভাব ও আবাসস্থল সংকটের কারণে এ প্রাণী বারবার লোকালয়ে প্রবেশ করছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।