এ রোজাগুলোকে বলা হয় ‘আইয়ামে বিজের রোজা’। আরবি দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত আইয়ামে বিজ। আইয়াম অর্থ দিবসসমূহ, আর বিজ অর্থ শুভ্র, সাদা, শ্বেত, খাঁটি, নির্ভেজাল। আরবি চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখকে আইয়ামে বিজ বলা হয়। ওই তিন দিনে চাঁদ পূর্ণতা লাভ করে, প্রচণ্ড আলো বিকিরণ করে, চাঁদের আলো কানায় কানায় ভরে যায়। শুভ্র-সাদা সুন্দর ও আলোকময় হয়ে ওঠে। এইজন্যই এ দিনগুলোকে আইয়ামে বিজ তথা শুভ্র সাদা বলা হয়।
এ তিন দিনের রাতে জোসনার প্রচণ্ডতায় আলোকিত হয়ে দিনের আলোর মতো দৃশ্যমান হয়। মরুভূমিতে এটি বেশি বুঝা যায়। আলোকিত ওই রাতগুলোকে দিনের সাথে সম্পৃক্ত করে ‘আইয়ামে বিজ’ নামকরণ করা হয়েছে। আরবিতে ইয়াওমুন শব্দ দিন ও রাত উভয়কে অন্তর্ভুক্ত করে। ফাতহুল বারিতে বলা হয়েছে ‘বিজ বলতে ওই সব রজনীই উদ্দেশ্য, যাতে রাতের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত চাঁদ দৃশ্যমান হয়।
আরও পড়ুন: আসমানি কিতাব কাকে বলে
আইয়ামে বিজের রোজা
হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমার প্রিয়তম বন্ধু আমাকে তিনটি ব্যাপারে বিশেষভাবে অসিয়ত করেছেন, ১. প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখা, ২. দুই রাকাত সালাতুত্ দুহা আদায় করা। ৩. রাতে ঘুমানোর আগেই যেন বিতর নামাজ আদায় করি (বুখারি)।
হযরত আব্দুল মালেক বিন কুদামাহ বিন মালহান রা. বলেন, ‘রসুলুল্লাহ সা. আমাদেরকে আইয়ামে বিজ তথা চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন (আবু দাউদ)। রসুলুল্লাহ সা. বলেন, ‘প্রতি মাসে তিনটি রোজা একযুগ রোজার সমতুল্য, মনোরম সে দিন তিনটি হলো ১৩, ১৪ ও ১৫’ (নাসায়ি)
হযরত ইবনু আব্বাস রা. বলেন, রসুলুল্লাহ সা: সফর ও মুকিম অবস্থায় কখনো আইয়ামে বিজের রোজা ভঙ্গ করতেন না (নাসায়ি)। রসুল সা. বলেন, ‘কোনো মাসে তিনটি রোজা রাখলে ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ রাখবে’ (আহমদ)।
এসব হাদিস থেকে প্রমাণ হয়, রসুল সা. তার প্রিয় সাথীদের আইয়ামে বিজের রোজা রাখার জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ দিতেন; কিন্তু এই নির্দেশ আবশ্যকতার ভঙ্গিতে ছিল না বরং তা ছিল নফল তথা অতিরিক্ত আমল হিসেবে। তিনি সাহাবিদের এই রোজা রাখতে বলতেন কিন্তু তাদের সবাই এ নির্দেশ পালন করতেন না, যা থেকে প্রমাণ হয়, তার এ নির্দেশ নফল হিসেবে ছিল ওয়াজিব হিসেবে নয়।
আইয়ামে বিজের রোজার ফজিলত
হযরত আবদুল মালেক বিন কুদামাহ বিন মালহান রা. বলেন, ‘রসুলুল্লাহ সা. আমাদেরকে আইয়ামে বীজ তথা চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন’ (আবু দাউদ)।
রসুলুল্লাহ সা. বলেন, প্রতি মাসে তিনটি রোজা একযুগ রোজার সমতুল্য, মনোরম সে দিন তিনটি হলো ১৩, ১৪ ও ১৫’ (নাসায়ি)। ইবনু আব্বাস রা. বলেন, ‘রসুলুল্লাহ সা. সফর ও মুকিম অবস্থায় কখনো আইয়ামে বীজের রোজা ভঙ্গ করতেন না’ (নাসায়ি)। রসুল সা. বলেন, ‘কোনো মাসে তিনটি রোজা রাখলে ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ রাখবে’ (আহমদ)।
হযরত আবু যর রা. থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, প্রত্যেক মাসে (নফল) সিয়াম পালন করলে ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে পালন করো (তিরমিজি ৭৬১, নাসায়ি ২৪২৪) হযরত ক্বাতাদাহ ইবনে মিলহান রা. হতে বর্ণিত রসুলুল্লাহ সা. আমাদেরকে ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে সিয়াম পালনের জন্য আদেশ করতেন (আবু দাউদ ২৪৪৯, নাসায়ি ২৪৩২)
আরও পড়ুন: মাছের পেটে যে অবস্থায় ছিলেন ইউনুস আ.
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত রসুলুল্লাহ সা. বাড়ীতে থাকা অবস্থায় অথবা সফরে থাকা অবস্থায়, কখনোই আইয়ামে বীজের সিয়াম পালন ছাড়তেন না। (নাসায়ি ২৩৪৫) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আ’মর ইবনে আস রা. হতে বর্ণিত রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন,“প্রতি মাসে তিনটি করে সিয়াম পালন, সারা বছর ধরে সিয়াম পালনের সমান (বুখারি ১১৫৯, ১৯৭৫)
]]>