এবারের আসরের মূল ফোকাস মিয়ানমারের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও দক্ষিণ চীন সাগর ইস্যুতে আলোচনা। সংস্থাটির মহাসচিব কাও কিম হৌর্ন বলছেন, ‘এবারের সম্মেলন হতে যাচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি রূপকল্প বাস্তবায়নের নতুন যাত্রা।’
মিয়ানমারে টানা গৃহযুদ্ধ, চীনের সঙ্গে তাইওয়ানের উত্তেজনাসহ আঞ্চলিক নানা অস্থিরতার মধ্যেই হতে যাচ্ছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সহযোগিতা সংস্থা আসিয়ানের ৪৬তম সম্মেলন।
আরও পড়ুন:মিয়ানমার ইস্যুতে আসিয়ানের আরও ঐক্য প্রয়োজন: জোকো উইদোদো
এবারের আসরে সভাপতিত্ব করবেন সংস্থার বর্তমান চেয়ারম্যান মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
একইসঙ্গে বসছে আসিয়ান-গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল সম্মেলন ও আসিয়ান-জিসিসি-চীন ত্রিপাক্ষিক বৈঠক। এবারের প্রতিপাদ্য—‘অন্তর্ভুক্তি ও স্থায়িত্ব’।
আঞ্চলিক সহযোগিতা, ব্যবসা, নিরাপত্তা এবং পরিবেশগত ভারসাম্য গুরুত্ব পাবে এবারের সম্মেলনে।
সম্মেলনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে মিয়ানমার সংকট। সামরিক শাসনের কারণে দেশটির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা মুখ থুবড়ে পড়ায় আসিয়ান জোটের ঐক্য নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যদিও মহাসচিব কাও কিম হৌর্ন জানান, সদস্য রাষ্ট্রগুলো মিয়ানমারের রাজনৈতিক সংকট এবং সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।
দক্ষিণ চীন সাগরে ক্রমবর্ধমান সামরিকীকরণ ও সামুদ্রিক দ্বন্দ্বে দীর্ঘদিন ধরেই চীন ও আসিয়ান সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনা চলমান। কাও বলেন, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত আছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে ‘কোড অব কন্ডাক্ট’ চুক্তি সম্পন্ন করতে দুই পক্ষই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এই চুক্তি চীন ও সংস্থাটির মধ্যে আস্থা গড়ে তুলতে এবং সাগরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই তৈরি হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ‘আসিয়ান কমিউনিটি ভিশন ২০৪৫’ এর আনুষ্ঠানিক উন্মোচন। এটি ২০ বছরের একটি রোডম্যাপ, যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে একীভূত করার কৌশল নির্ধারণ করছে।
এই ভিশনের আওতায় চারটি নতুন কৌশলগত পরিকল্পনা গৃহীত হচ্ছে, যা আসিয়ানের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন, প্রযুক্তি বিনিয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণ এবং সুশাসনকে অগ্রাধিকার দেবে।
দু'দিনব্যাপী এই সম্মেলনের আগে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সভা, রাজনৈতিক-নিরাপত্তা পরিষদ, অর্থনৈতিক কাউন্সিল ও সমন্বয় কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন:জাকার্তায় আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দিলেন রাষ্ট্রপতি
এছাড়াও থাকছে সংসদীয় ফোরাম , যুব প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে আলোচনা। এসব আয়োজন আঞ্চলিক যোগাযোগ, অংশীদারিত্ব ও কৌশলগত ঐক্যকে আরও শক্তিশালী করার বড় সুযোগ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
]]>