‘মার্চ টু ঢাকা’ একদিন এগিয়ে আনার ঘোষণায় আন্দোলন পায় নতুন গতি

২ দিন আগে
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে দেশজুড়ে চলা অসহযোগ আন্দোলনের বিপরীতে গত বছরের ৪ আগস্ট ঘোষণা দিয়ে অস্ত্র হাতে মাঠে নামে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ। পুরো দেশ পরিণত হয় এক যুদ্ধক্ষেত্রে। প্রাণ হারান শতাধিক মানুষ। আন্দোলনকে জঙ্গি হামলা বলে আখ্যায়িত করে হাসিনা সরকার। কিন্তু তাতে বিচলিত হয়নি অভ্যুত্থানকারীরা, বরং ঘোষণা আসে মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচির।

রক্তাক্ত জুলাইয়ের ৩৫ তারিখ (৪ আগস্ট ২০২৪)। গুলি, টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেডের মুহুর্মুহু শব্দে রাজধানী ঢাকা পরিণত হয় আতঙ্কের জনপদে। এত রক্ত, এত মৃত্যুর মিছিল স্বাধীন বাংলাদেশ এর আগে দেখেনি।

 

সরকার পতনের এক দফা দাবিতে তখন চলছে অসহযোগ আন্দোলন। স্বৈরাচারের মসনদ ভাঙার শেষ পেরেক ঠোকা হয়ে গেছে ততক্ষণে। মরণ কামড় চালাতে থাকে সরকার ও তার পেটোয়া বাহিনী।

 

সিভিল পোশাকে অনেকের হাতে এদিন দেখা যায় আগ্নেয়াস্ত্র, যা ব্যবহৃত হয় ছাত্র জনতার ওপর। সারাদিনের হামলা আর গুলিতে মারা যান শতাধিক মানুষ। আহত হাজার হাজার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গোটা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করে সরকার। ঘোষিত হয় তিন দিনের সাধারণ ছুটি।

 

আরও পড়ুন: ‘৩৪ জুলাই’ / কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে আসে সরকার পতনের একদফা ঘোষণা

 

এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে নেতাকর্মীদের রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিএনপির ও অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের রাজপথে নেমে এসে জনতার সঙ্গে একাত্ম হয়ে গণহত্যাকারী স্বৈরাচারী সরকারের পতন ত্বরান্বিত করতে অসহযোগ আন্দোলন সফল করতে আহ্বান জানাচ্ছি।

 

যার বিপরীতে রাজপথের সকলকে জঙ্গি সন্ত্রাসী উল্লেখ করে তাদের নির্মূল না করা পর্যন্ত মাঠে থাকার ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। এদিকে সশস্ত্র বাহিনীকে ছাত্র জনতার মুখোমুখি না দাঁড়ানোর আহ্বান জানায় সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারা। এছাড়াও বাংলাদেশে চলমান 'বেদনাদায়ক' সহিংসতা অতিসত্বর বন্ধ করতে হবে বলে বিবৃতি দেয় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনের প্রধান ফলকার তুর্ক।

 

এদিকে মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচির তারিখ পরিবর্তন করে ৬ আগস্টের পরিবর্তে ৫ আগস্ট কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। তিনি এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘জরুরি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লং মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচি একদিন এগিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। সারা দেশ থেকে মুক্তিকামী জনগণকে ঢাকায় আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’

 

আর সমন্বয়ক সারজিস আলম এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘পরশু নয়, কালকেই লং মার্চ টু ঢাকা!’ সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আগামীকালই 'মার্চ টু ঢাকা'। ইতিহাসের সাক্ষী ও চূড়ান্ত লড়াইয়ে শামিল হতে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করুন এখনই।’ বলা চলে চূড়ান্ত বিজয়ের টার্নিং পয়েন্ট ছিল এই একদিন আগে মার্চ টু ঢাকা ঘোষণার কর্মসূচি।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন