শনিবার (১৫ নভেম্বর) সূত্রাপুর থানায় মামলাটি করেন নিহত মামুনের স্ত্রী বিলকিস আক্তার রীপা। সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামুন হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে দুই শুটারসহ পাঁচজনকে গ্রেফতারের পরও মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে, এ বিষয়ে ওসি বলেন, আসামি ধরা পড়েছে অস্ত্র মামলায়। হত্যা মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত করে বের করবেন।
এর আগে গত ১১ নভেম্বর তারিক সাইফ মামুন হত্যায় অংশ নেয়া দুই শ্যুটারসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা হলেন- শুটার ফারুক ওরফে কুত্তা ফারুক ও রবিন এবং ইউসুফ, রুবেল ও শামীম। পরদিন ১২ নভেম্বর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদনের মাধ্যমে তাদের ৫ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
পুলিশের দাবি, গ্রেফতার ফারুক ও রবিন ছিলেন পেশাদার দুই শ্যুটার। গ্রেফতারের সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি পিস্তল, হত্যাকাণ্ডের পারিশ্রমিক হিসেবে নগদ টাকা ও হত্যার কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
ডিবি জানায়, হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী রনি। রনি ছিলেন একসময়ের মুদি দোকানি, বর্তমানে কাফরুলের বাসিন্দা এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী। আন্ডারওয়ার্ল্ডের আলোচিত জুটি ইমন-মামুনের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য এবং প্রকট। হত্যাকাণ্ডের জন্য রনি নিজে দুই লাখ টাকা দেয় এবং অস্ত্রও সরবরাহ করে। মূল আন্ডারওয়ার্ল্ডের আধিপত্য বিস্তার নিয়েই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। রনি পলাতক রয়েছে। তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার আসামি মামুন খুনের কারণ জানাল পুলিশ
গত ১০ নভেম্বর বেলা ১১টার দিকে আদালতে হাজিরা শেষে ফেরার পথে সূত্রাপুরে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফটকের সামনে মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করছেন এক ব্যক্তি। পেছন থেকে কোমর থেকে অস্ত্র বের করেন দুজন। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই একের পর এক গুলিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন টার্গেট ব্যক্তি। অপারেশন শেষে মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায় গুলি ছোড়া দুজন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার (১০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে এ ঘটনা ঘটে। খুব কাছ থেকে গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা। গুলিবিদ্ধ তারিক সাইফ মামুনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন পরিবারের সদস্যরা। তাদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে চারপাশ।
পুলিশ জানায়, নিহত তারিক সাইফ মামুন রাজধানীর তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের একজন। তিনি ‘ইমন-মামুন গ্রুপের’ অন্যতম প্রধান ছিলেন। একসময় তিনি কুখ্যাত সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের সহযোগী ছিলেন। অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইমন ও মামুনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। আলোচনায় উঠে আসে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফের নাম। ১৯৯৭ সালে মোহাম্মদপুর জোসেফের ভাই টিপু হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান আসামি ছিলেন নিহত মামুন। সেই ক্ষোভ থেকে জোসেফের টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হতে পারে বলেও ধারণা পুলিশের।
]]>
১ দিন আগে
১








Bengali (BD) ·
English (US) ·