সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, জেলার দৌলতপুর, ঘিওর, শিবালয়, হরিরামপুর ও সাটুরিয়া উপজেলায় সংকট সবচেয়ে বেশি।
বাসিন্দারা জানায় শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার বিষয়টি নতুন নয়, তবে এ বছরের সংকট তুলনামূলকভাবে দীর্ঘ ও তীব্র।
অনেকে দূর-দূরান্ত থেকে পানি সংগ্রহ করে কোনোভাবে রান্নাবান্না, গৃহস্থালির কাজকর্ম চালিয়ে নিচ্ছেন। শুধু খাবার পানি নয়, এই সংকটের প্রভাব পড়েছে কৃষি, পয়ঃনিষ্কাশন ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার ওপরও।
দৌলতপুরের বাসিন্দা মো. আফতাব হোসেন বলেন, ‘এপ্রিল-মে মাসে অবস্থা ভয়াবহ ছিল। জুনে কিছু বৃষ্টি হয়েছে, তাই কিছু নলকূপে পানি উঠলেও সংকট এখনো কাটেনি।’
সাধারণ মানুষের দাবি, বিশুদ্ধ পানির সংকট মোকাবিলায় দ্রুত সরকারি সহযোগিতা দরকার। দরিদ্র পরিবারগুলোকে বিনামূল্যে বা ভর্তুকি দিয়ে গভীর নলকূপ বসানোর ব্যবস্থা করা হলে, সংকট অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
আরও পড়ুন: বিল পরিশোধেও মিলছে না পানি, দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় হাহাকার
হরিরামপুরের কৃষক আলিমুদ্দিন বলেন, ‘গভীর নলকূপ বসালে সমস্যা মেটে, কিন্তু তার খরচ ১-২ লাখ টাকা। আমাদের পক্ষে সম্ভব না। সরকার যদি সহযোগিতা করত, তবে কিছুটা স্বস্তি পেতাম।’
নলকূপ মিস্ত্রী আরিফ মিয়া বলেন, ‘ভূগর্ভস্থ স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সাধারণ নলকূপ অকেজো হয়ে পড়েছে। এখন সবাই ৩০০-৪০০ ফুট গভীর সাবমারসিবল পাম্পের দিকে ঝুঁকছে। কিন্তু এগুলোর খরচ গরীব মানুষের নাগালের বাইরে।’
জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী গাজী ফাতিমা ফেরদৌস বলেন, ‘এই সমস্যাটি শুধু মানিকগঞ্জ নয়, সারা দেশেই এখন এ সমস্যা দেখা দিচ্ছে। মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত এ সমস্যা বেশি প্রকট হয়। আমরা মানুষকে গভীর নলকূপ বসানোর পরামর্শ দিচ্ছি। জুলাইয়ের মধ্যে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে বলে আশা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মানিকগঞ্জ জেলায় বর্তমানে ৮৫ হাজার ৭২৯টি টিউবওয়েল রয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলোই পর্যাপ্ত গভীর না হওয়ায় পানির স্তর না পেরোতে পেরে অকেজো হয়ে পড়ছে।’