মানসম্মত পণ্য তৈরি করেও ব্র্যান্ডিং ঘাটতিতে চামড়া শিল্প

২ সপ্তাহ আগে
মানসম্মত পণ্য তৈরি করেও ব্র্যান্ডিং ঘাটতিতে পড়ে আছে চামড়া, হস্তশিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন সম্ভাবনাময় শিল্প খাত। শুধু আন্তর্জাতিক বাজার নয়, দেশীয় বাজারেও হিমশিম খাচ্ছেন অনেক উদ্যোক্তা। বৈশ্বিক বাজার দখলে নিতে অভ্যন্তরীণ বাজারেও ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরিতে গুরুত্ব দেয়ার তাগিদ অর্থনীতিবিদদের।

রাজধানী ঢাকার অদূরে সাভারের একটি কারখানায় তৈরি হয় বিশ্বের নামী-দামী সব ব্র্যান্ডের ব্যাগ, মানিব্যাগ ও বেল্টসহ বিভিন্ন পণ্য। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় পুরোটাতে জড়িত দেশীয় কর্মীরা। রফতানি নির্ভর খাতে যুক্ত হতে পেরে তারাও সন্তুষ্ট।

 

কর্মীরা জানায়, দেশের জন্য কিছু করতে পেরে বেশ ভালো লাগে। এটা থেকে বৈদাশিক মুদ্রা আসে।


শুধু এই কারখানাতেই নয়, দেশে এমন হাজারও কারখানায় মানসম্মত পণ্য তৈরি হচ্ছে, দেশজুড়ে গড়ে উঠছে নতুন নতুন শিল্প। কিন্তু, আন্তর্জাতিক বাজার তো দূরের কথা, দেশীয় বাজারে টিকে থাকতে নানা চ্যালেঞ্জে পড়ছেন উদ্যোক্তারা। কারণ, সঠিক ব্র্যান্ডিংয়ের ঘাটতি। বিশেষ করে হস্তশিল্প, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, চামড়াশিল্প কিংবা তথ্যপ্রযুক্তি খাত—সবখানেই দেখা যাচ্ছে একই চিত্র।


জেনেজিয়া ক্রাফটস এন্ড লেদার গুডসের সত্ত্বাধিকারী বলেন মোহাম্মদ শরিফুল হাসান, ‘বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে আমাদের বি-টু-বি বিজনেস হয়। বিদেশি ক্রেতাদের ব্রান্ড, আর আমরা তাদের জন্য পণ্য তৈরি করি। হ্যান্ডিক্রাফ্ট হচ্ছে একটি পটেনশিয়াল প্রোডাক্ট যেটা বিদেশিরা আমাদের কাছ থেকে কিনবে। তো হ্যান্ডিক্রাফ্ট ও এর আশপাশের পণ্যগুলোর ব্যান্ডিং করা গেলে মেড ইন বাংলাদেশ আরও মর্যাদার জায়গায় যাবে।’


আরও পড়ুন: চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ধাক্কা সামলাতে প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জনের ওপর জোর


জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে মোট রফতানি হয়েছে ৪ হাজার ৮২৮ কোটি ৩৯ লাখ ডলারের পণ্য। যা এর আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৮.৫৮ শতাংশ বেশি। যার অধিকাংশই আমদানি করা প্রতিষ্ঠানের নামে বাজারে বিক্রি হয়ে থাকে।

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্ববাজারে নিজস্ব ব্র্যান্ড ইমেজ বাড়াতে হলে দেশের বাজারে সুনাম তৈরিতে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। এতে আস্থা পাবে বৈশ্বিক ক্রেতারা।

 

অর্থনীতিবিদ ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমাদের বৈশ্বিক ক্রেতাদের রুচি বোঝা এবং সে অনুযায়ী পণ্য তৈরিতে ঝুঁকতে হবে। এবং দেশের মার্কেটে গুড ইমেজ তৈরিতে মন দিতে হবে, এতে বিদেশের বাজারেও ভালো দাম পাওয়া যায়।’

 

বিশ্লেষকদের মতে, নিজস্ব পরিচয় তৈরি করতে পারলেই দেশের শিল্পখাত হতে পারে আরও সমৃদ্ধ ও প্রতিযোগিতামূলক।


বাংলাদেশের সম্ভাবনা সীমাহীন। এখন শুধু দরকার একসাথে কাজ করার—গুণগত মানের পাশাপাশি বিশ্বমানের ব্র্যান্ডিং নিশ্চিত করার। তাহলেই 'মেড ইন বাংলাদেশ' হয়ে উঠবে এক আস্থার প্রতীক, আর বাংলাদেশ জায়গা করে নেবে বৈশ্বিক ব্র্যান্ডের শীর্ষ সারিতে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন