মাদ্রাসাছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু, ময়নাতদন্ত ছাড়াই হাসপাতালের তালা ভেঙে লাশ নেয়ার চেষ্টা

৩ সপ্তাহ আগে
মাদারীপুরে মাদ্রাসাশিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়ার সময় এক মাদ্রাসাছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার দুধখালী ইউনিয়নের মিঠাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তবে বিষয়টি স্বাভাবিক মৃত্যু বলে হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই গেটের তালা ভেঙে মরদেহ নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন স্বজনরা। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।


নিহত তানহা আক্তার (১০) একই এলাকার সামির সরদার সানির মেয়ে এবং স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিল।


পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় বাড়ির ভেতর স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা মোহাম্মদ ইমরানের কাছে প্রাইভেট পড়ছিল শিশু তানহা। এ সময় হঠাৎ তার পায়ে বিড়াল কামড় দেয় বলে পরিবারের লোকজনের ধারণা। মুহূর্তেই পা থেকে রক্তপাত শুরু হলে অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই শিক্ষার্থী। গুরুতর অবস্থায় মেয়েটিকে নিয়ে যাওয়া হয় মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে।


আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুই শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু


পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে হাসপাতালের চিকিৎসক তানহাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় পরিবারের লোকজন চিকিৎসকে জানান মেয়েটিকে সাপে কামড় দিয়েছে। সন্দেহ হলে থানা পুলিশে খবর দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে পুলিশ এসে মরদেহ সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করা শুরু করলে দেখা দেয় উত্তেজনা। 


একপর্যায়ে মৃত শিশুর স্বজনরা হাসপাতালে কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে মেয়েটির মরদেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে সুরাতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে পুলিশ।


মেয়েটির বাবা সামির সরদার ওরফে সানি বলেন, ‘আমার মেয়ে মারা গেছে, তার মরদেহ আমরা দ্রুত বাড়ি নিয়ে যেতে চাই। আমাদের কারো প্রতি কোনো অভিযোগ নাই।’


আরও পড়ুন: ‘কেয়া আর নেই’ বলে শাশুড়িকে ফোন, মরদেহ হাসপাতালে ফেলে উধাও জামাই


মাদ্রাসাশিক্ষক মাওলানা মোহাম্মদ ইমরান বলেন, ‘আমি প্রাইভেট পড়াচ্ছিলাম, এমন সময় তানহা চিৎকার শুরু করে। পাশে একটি বিড়াল দেখতে পাই। পা থেকে রক্ত বের হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে শুনি মেয়েটি মারা গেছে।’


মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সিহাব চৌধুরী জানান, শিশুটিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বজনরা। শরীরে সাপে কামড় দেয়ার চিহ্ন নেই। তবে কয়েকটি আঁচড়ের দাগ পাওয়া গেছে। বিড়ালে কামড় দিলে এতো দ্রুত মারা যাওয়ার কথা নয়। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ জট তৈরি হয়েছে। ঘটনার কারণ ময়নাতদন্ত ছাড়া বলা যাবে না।’


মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আদিল হোসেন জানান, ‘মাদ্রাসাছাত্রী নিহতের ঘটনার নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। একবার পরিবার বলেছে সাপের কামড়ে মারা গেছে, আবার তারাই বলছে বিড়ালে কামড় দিয়েছে। স্বজনরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। ময়নাতদন্ত শেষে রিপোর্ট হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন