জেলার তথ্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত পাড়া-মহল্লা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সড়কজুড়ে চলছে লাগাতার মাইকিং। কোথাও শপিংমলের অফার প্রচার, কোথাও রাজনৈতিক বা সামাজিক কর্মসূচি, আবার কোথাও প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিজ্ঞাপন। মাইকিংয়ের শব্দে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত শব্দে উচ্চ রক্তচাপ, বুকের ব্যথা, শ্বাসকষ্টসহ নানা শারীরিক সমস্যা বাড়ছে। আইন অনুযায়ী, নিরব ও আবাসিক এলাকায় দিনে ৫০ এবং রাতে ৪০ ডেসিবল, শিল্প ও বাণিজ্যিক এলাকায় দিনে ৭৫ ও রাতে ৭০ ডেসিবল মাত্রায় শব্দ করার নিয়ম রয়েছে। এই আইন অমান্য করলে ১ থেকে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানার বিধান রয়েছে।
মাদারীপুর শহরের পানিছত্র এলাকার বাসিন্দা শচীন গাঙ্গুলি বলেন, ‘ঘরে ও বাইরে সবখানেই মাইকিংয়ের উচ্চ শব্দে অতিষ্ঠ। এটি বন্ধ করা উচিত, না হলে বাড়তে পারে রোগের সংখ্যা।’
চরমুগরিয়া এলাকার বাসিন্দা খসরু আহম্মেদ বলেন, ‘সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মাইকিং চলতেই থাকে। একটি যায়, আরেকটি আসে। এর শেষ কোথায়, আমরা জানি না। শব্দদূষণের কারণে আমরা বিরক্ত।’
আরও পড়ুন: চকচকে সেতুটি রাত হলেই হয়ে ওঠে ‘ভূতের রাজ্য’
হাজিরহাওলা গ্রামের বাসিন্দা ও আলহাজ আমিনউদ্দিন হাইস্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘স্কুলে পাঠদানের সময় বা বাসায় পড়ালেখার সময়ও বিজ্ঞাপনের মাইকিংয়ের কারণে সমস্যা হয়। আমরা এর থেকে স্থায়ী মুক্তি চাই।’
পথচারী ওমর ফারুক খান বলেন, ‘রাস্তা দিয়ে হাঁটাচলা করা দায়। বিভিন্ন কোম্পানি ও হাসপাতালের বিজ্ঞাপনের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ সবাই। শিশুরাও বিরক্ত। রোগবালাই বাড়ছে। কিন্তু কেউ এর দায় নিচ্ছে না, ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’
জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এটি মূলত পরিবেশ অধিদফতরের দায়িত্ব। তারপরও জেলা তথ্য অফিস থেকে সচেতনতা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে, যাতে কেউ অতিমাত্রায় শব্দদূষণ না করেন।’
মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (মিডিয়া) শাহ্ মোহাম্মদ সজীব বলেন, ‘উচ্চ শব্দে মাইকিং করলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। শব্দের একটি নির্ধারিত মাত্রা রয়েছে, আইনেও তা উল্লেখ আছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছেন।’
]]>