মাদারীপুরে ঝুঁকি নিয়েই চলছে ডাকঘরের কার্যক্রম

১ দিন আগে
কোথাও দরজা-জানালা নেই, আবার কোথাও খসে পড়ছে ভবনের পলেস্তারা। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ভবনগুলোতেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে মাদারীপুরের ডাকঘরগুলোর কার্যক্রম। কর্মচারীদের অভিযোগ, রোদ-বৃষ্টি ও ঝড়ের মধ্যেও বছরের পর বছর সেবা দিলেও কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি। যদিও দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন ভবন নির্মাণের জন্য একাধিকবার চিঠি দেয়া হয়েছে, তবুও কর্তৃপক্ষের কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, ব্রিটিশ আমলে জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখার অধীনে মাদারীপুরের চরমুগরিয়া এলাকায় নির্মিত ‘উপ-ডাকঘর’টি যুগের পর যুগ ধরে ১৫টি ইউনিয়নের ডাকঘরের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বর্তমানে একতলা ভবনটির পলেস্তারার অংশ খসে পড়ছে, বেড়ানো রড ক্ষয় হচ্ছে, আর বৃষ্টির পানিতে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ভিজে যাচ্ছে। প্রতিমুহূর্তেই কর্মচারীদের জন্য আতঙ্ক এবং ভয়ের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।

 

এদিকে জেলার বেশিরভাগ ডাকঘরের অবস্থা একইরকম। দরজা-জানালা দুর্বল হওয়ায় চোরের আতঙ্ক বাড়ছে। মূল্যবান কাগজপত্র দায়িত্বে থাকা কর্মচারীদের সাঙ্গে করে বাড়ি নিতে হয়। তারা অভিযোগ করেন, বিষয়টি বারবার কর্তৃপক্ষকে জানালেও শুধুই আশ্বাস দেয়ার বাইরে কিছু হচ্ছে না।

 

তবে ভবনগুলোর দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ডাকঘরগুলো নতুনভাবে নির্মাণের জন্য আঞ্চলিক অফিসকে জানানো হলেও কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

 

আরও পড়ুন: বিশ্ব ডাক দিবস / হাতের লেখা চিঠি এখন ইতিহাস, তবু স্মৃতিতে বেঁচে আছে এক টুকরো আবেগ

 

জানা যায়, মাদারীপুর জেলায় মোট ৮৪টি ডাকঘর আছে। এর মধ্যে ২৭টি ডাকঘরের বরাদ্দকৃত জমি থাকলেও নিজস্ব ভবন আছে মাত্র ১৬টির। বাকি ৬৮টির কার্যক্রম চলছে ভাড়া করা ভবনে। এই ভাড়া করা ভবনগুলোর অধিকাংশই পরিত্যক্ত এবং ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

 

চরমুগরিয়া ‘উপ-ডাকঘর’-এর পোস্ট মাস্টার আব্দুস সামাদ ফকির বলেন, ‘এটি সরকারি ভবন। আমরা ৩৮৮৫ টাকা ভাড়া দিয়ে এখানে থাকি। পুরো ভবনই এখন ঝুঁকিপূর্ণ। বৃষ্টি আর ঝড়ে আতঙ্ক নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে।’

 

 

শহরের পুরাণ বাজার ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার মেহেদুল ইসলাম জানান, ‘এখানে কোনো নিরাপত্তা নেই। বৃষ্টির সময় টিনের চালা দিয়ে পানি পড়ে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ভিজে যায়। আলমিরার অবস্থা দারুণ খারাপ। চোরের ভয়ে কাগজপত্র সঙ্গে করে বাড়ি নিয়ে যেতে হয়। নতুন ভবন নির্মাণ হলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবো।’

 

মাদারীপুর প্রধান ডাকঘরের পরিদর্শক মো. জিহাদুল ইসলাম বলেন, ‘একসময় ডাক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল। ডিজিটাল যুগে জনপ্রিয়তা কিছুটা কমলেও কার্যক্রম থেমে যায়নি। নতুন ভবন নির্মাণ করলে আবারও ডাক কার্যক্রম চাঙ্গা হবে। আমরা একাধিকবার আঞ্চলিক অফিসকে নতুন ভবন নির্মাণের অনুরোধ করেছি, কিন্তু এখনো কোনো ব্যবস্থা নেই। দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ করা হোক, এটাই আমাদের দাবি।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন