মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন প্রবাস ফেরত আলমগীর, চোখ উপড়ানো মরদেহ মিলল ঝোঁপে

৩ দিন আগে
ময়মনসিংহের নান্দাইলে প্রবাস ফেরত এক যুবককে হাত-পা বেঁধে, দুই চোখ উপরে, দাঁত ভেঙে ও শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। হত্যার পর বস্তায় ভরে লাশ মাটিচাপা দেয়া হয়। মরদেহ উদ্ধারের পর সুরতহালে এমন নৃশংসতার প্রমাণ পায় পুলিশ। নিহত যুবকের মরেদহ রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত করা হয়।

নিহত মো. আলমগীর হোসেন (৩০) নান্দাইল উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের সংগ্রামখেলী গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২ টার দিকে সংগ্রামখেলী বাজারের পাশে বাঁশের ঝোঁপ থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

 

পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মো. আলমগীর হোসেন সৌদি আরবে থাকতেন। গত তিন বছর আগে দেশে ফেরেন। এরপর এলাকায় কৃষি কাজ করতেন। এলাকায় কিছু ব্যক্তি মাদকের ব্যবসার সাথে জড়িত থাকায় এর প্রতিবাদ করতেন আলমগীর। এ নিয়ে মাদককারবারীদের সঙ্গে  বেশ কয়েকবার আলমগীর হোসেনের ঝগড়া হয়। গত সপ্তাহেও আলমগীর হোসেনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয় কয়েকজনের।

 

পরে গত বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে আলমগীর হোসেন নিখোঁজ হলে অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান মেলেনি। এ ঘটনায় আলমগীর হোসেনের মা মনোয়ারা বেগম রোববার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

 

আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে ১৪ ঘর পুড়ে ছাই, শ্রমিকের মৃত্যু

 

এদিকে কোথাও আলমীর হোসেনের সন্ধান মিলছিলো না। শনিবার দুপুর ২টার দিকে শেরপুর ইউনিয়নের সংগ্রামখেলী মধ্য বাজারের বাঁশের ঝোঁপ থেকে পঁচা গন্ধ বের হলে স্থানীয়রা গিয়ে পুঁতে রাখা বস্তায় মরদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। পরে পুলিশের সহযোগিতায় প্লাস্টিকের বস্তায় পুঁতে রাখা মরদেহ উদ্ধার করে।

 

এ ঘটনায় নান্দাইল মডেল থানায় ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন নিহতের মা মনোয়ারা বেগম। মামলার আসামিরা হলেন- মো. মাসুদ রানা (৩৬),ইমাম হোসেন ওরফে রতন (৩৩),মো. রাজন মিয়া (২৬), মো.খাইরুল ইসলাম (৩৯), খোকা (২৬), সাইদুল ইসলাম (৩৪), সাদেক মিয়া (৩৬), রিপন মিয়া (৩৩), রফিকুল ইসলাম (২৭), আ: কাদির (২৬) ও আতাবুর রহমান (৬০)।

 

শনিবার রাতে উপজেলার আব্দুল্লাহপুর একতা বাজার থেকে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে ইমাম হোসেন ওরফে রতন (৩৩) নামে একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাকে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রোববার বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

 

নিহতের ভাবি সাদিয়া আক্তার বলেন, আমার দেবর স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তারা তাকে হত্যা করেছে। আমরা এর বিচার চাই।

 

আরও পড়ুন: ময়মনসিংহ যেন অবৈধ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিকের রাজ্য

 

নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জালাল উদ্দীন মাহমুদ বলেন, নিহত যুবক স্থানীয় মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলতো। মূলত এ কারণেই তাকের পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। গলায় প্লাষ্টিকের দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করা হয়, ঘাড় মটকে দেয়া হয়, হাত-পা বাঁধা ছিলো। দুটি চোখও উপরে নেয়া হয়। নৃশংসভাবে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হয়। গ্রেফতার হওয়া ইমাম হোসেন নিজেন সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার না করলেও তদন্তে আমরা তার সম্পৃক্ততা পেয়েছি। এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে গ্রেফতারে আমাদের অভিযান চলছে।
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন