মাদক মামলার আসামিরা জামিনে বেরিয়েই পুরনো পেশায়!

২ দিন আগে
কুমিল্লায় মাদক মামলার সংখ্যা বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে, কিন্তু নেই দ্রুত বিচারের কোনো সুব্যবস্থা। আলাদা ট্রাইব্যুনাল না থাকায় দীর্ঘসূত্রিতা আর সাক্ষীর অভাবে মামলা নিষ্পত্তি ব্যাহত হচ্ছে। ফলে অনেক মাদক ব্যবসায়ী জামিনে বের হয়ে আবারও জড়িয়ে পড়ছে অপরাধে।

মাদক নির্মূলে প্রশাসনের তৎপরতা সত্ত্বেও সীমান্তবর্তী এই জেলায় মাদকের আগ্রাসন ঠেকানো যাচ্ছে না। জেলার পাঁচটি উপজেলার ১০৩ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় প্রতিদিন ভারত থেকে প্রবেশ করছে গাঁজা, ইয়াবা, মদসহ নানা মাদকদ্রব্য। হাত বদলের মাধ্যমে চক্রটি বারবার রুট পাল্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দিচ্ছে।


১০ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মীর আলী এজাজ বলেন, ‘প্রতিদিনই মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার ও মামলা করা হচ্ছে। কিন্তু দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই পার পেয়ে যাচ্ছে।’


কুমিল্লা আদালতের পরিদর্শক মো. সাদিকুর রহমান বলেন, ‘মাদক মামলায় সাক্ষীর অভাব সবচেয়ে বড় বাধা। প্রভাবশালীদের জড়িত থাকায় কেউ সাক্ষ্য দিতে চায় না।’


পিপি অ্যাডভোকেট কাইমুল হক রিংকু বলেন, ‘সাক্ষীদের উপস্থিতির জন্য নিয়মিত নোটিশ পাঠানো হলেও, তারা অনুপস্থিত থাকেন বা সাক্ষ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান। আবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তার বদলি বা অবসরের কারণেও তদন্ত শেষ হয় না।’


আদালতের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে কুমিল্লায় বিচারাধীন মামলার সংখ্যা প্রায় ১৯ হাজার। শুধুমাত্র গত জুন মাসে দায়ের হয়েছে ১৫৭টি নতুন মাদক মামলা, অথচ নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ৯৫টি।


আরও পড়ুন: জামালপুরে মাদক মামলার পলাতক আসামি হেরোইনসহ গ্রেফতার


মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কুমিল্লা শাখার উপ-পরিচালক বজলুর রহমান বলেন, ‘দ্রুত বিচার হলে সমাজে এর প্রতিফলন ঘটবে। আলাদা কোর্ট গঠনের মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তির গতি বাড়ানো সম্ভব।’


অ্যাডভোকেট বদিউল আলম সুজন, পিপি, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত বলেন, ‘মাদক মামলায় সাজা নিশ্চিত করা গেলে সমাজে এর ব্যবহার ও পাচার কমে যাবে।’


কামরুল ইসলাম নামে এক সামাজিক সংগঠক বলেন, ‘মাদক শুধু একজন ব্যক্তিকে নয়, ধ্বংস করে দিচ্ছে গোটা পরিবারকে। বিচার বিলম্বের সুযোগে অপরাধীরা আরও ভয়ংকর হয়ে উঠছে। সীমান্তবর্তী শহর কুমিল্লায় দ্রুত একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন না করলে মাদক চক্র ভাঙা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন