মাদক নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে বন্ধুকে হত্যা, গ্রেফতার ৩

২ সপ্তাহ আগে
নরসিংদীতে নিখোঁজের একদিন পর শুভ মিয়া (২০) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধারের ১৭ দিন পর হত্যার রহস্য উদঘাটনসহ জড়িত ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

রোববার (২৫ মে) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন নরসিংদীর পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি) এস. এম. মোস্তাইন হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

 

গ্রেফতারকৃতরা হলো- নরসিংদী সদর থানার শেখেরচর মোল্লাপাড়ার মো. জাকির হোসেনের ছেলে মো. হাবিবুর রহমান (২৪), মাধবদী থানার কুড়েরপাড় এলাকার মো. দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো. কবির হোসেন (২১), পলাশ থানার কুমারটেক এলাকার মো. জালালের ছেলে আহম্মাদ নাঈম (২৪)।

 

আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জ / ফিরোজ-জুলেখার স্বীকারোক্তিতে বেরিয়ে এলো হোটেল কর্মচারী আরাফাত হত্যার নেপথ্যের কাহিনি

 

মোস্তাইন হোসেন জানান, নরসিংদী সদর থানার শেখেরচর মোল্লাপাড়ার মানিক মিয়ার ছেলে শুভ মিয়া (২০) গত ৬ মে সন্ধ্যার আগে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর থেকে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। রাতে বাড়িতে না ফেরায় খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে পরদিন ৭ মে বাড়ি থেকে ২ কিলোমিটার দূরের একটি ডোবার পাড়ে শুভর মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় শুভ মিয়ার বড় ভাই মো. সাহেদ মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে নরসিংদী মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।

 

পরে থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআইয়ের ক্রাইমসিন টিম হত্যার ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে। তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২০ মে নারায়নগঞ্জের কাঁচপুর ও চাঁদপুরের মতলব এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় গ্রেফতারকৃত আসামি মো. হাবিবুর রহমানের (২৪) কাছ থেকে ভিকটিম শুভ মিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

 

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, শুভ মিয়া ও গ্রেফতারকৃতরা পরস্পর বন্ধু। ঘটনার সময় তারা বিভিন্ন স্থানে আড্ডা দিত এবং মাদক সেবন করত। গত ৫ মে রাতে শুভ মিয়াসহ মো. হাবিবুর, কবির, নাঈম ও অন্য একজন বন্ধু একসঙ্গে শুভর বাড়ির পাশে মাদক সেবন করে। পরের দিন ৬ মে সন্ধ্যায় শুভ মিয়া হাবিবকে মেসেঞ্জারে কল করে তার অবস্থান জানতে চায়। তখন হাবিবসহ অন্যান্যরা খিদিরপুর টেকপাড়া জানের মুখ ব্রিজের উত্তর পাশে আছে বলে জানায়। প্রায় আধা ঘণ্টা পর শুভও সেখানে যায়।

 

আরও পড়ুন: গাজীপুরে মোবাইল চোর সন্দেহে দিনমজুরকে পিটিয়ে হত্যা

 

এ সময় শুভসহ আরও ৪ জন বন্ধু একত্রে মাদক সেবন করে। মাদক সেবনকালে মাদক সংগ্রহ সংক্রান্ত বিষয়ে শুভর সঙ্গে হাবিবের তর্কাতর্কি হয়। এক পর্যায়ে আসামি হাবিবুর ভিকটিম শুভর গলা চেপে ধরে কিল, ঘুসি মারতে থাকে। একই সঙ্গে কবির, নাঈম ও অন্য একজন বন্ধু শুভর নাকে মুখে এলোপাথাড়িভাবে কিল, ঘুসি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলের পাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা গরু বাঁধার একটি দড়ি (রশি) পেয়ে শুভর গলায় প্যাঁচ দিয়ে দুই দিক থেকে দড়ি টেনে ধরে তারা।

 

এতে শুভ মিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মৃত্যু হয়েছে বুঝতে পেরে মরদেহ রাস্তার পাশের ডোবায় ফেলে দেয় এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দড়ি (রশি) খালের পানিতে ছুড়ে মারে। হত্যার পর জড়িতরা অজ্ঞাত স্থানে পালিয়ে যায়।

 

গ্রেফতারের পর তারা বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারা মোতাবেক হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। এ ঘটনায় জড়িত পলাতক আসামি গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পিবিআই।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন