সংস্কার ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ধারাবাহিক আলোচনার মধ্যেই, রাজপথের কর্মসূচিতে জামায়াত-ইসলামী আন্দোলনসহ ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দল। প্রায় অভিন্ন দাবিতে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে মাঠে নামে দলগুলো। সংসদের দুই কক্ষে পিআর পদ্ধতিতে ভোট, জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন, জাতীয় পার্টি-১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধের মতো ইস্যুতে তোলা হয় জোরালো আওয়াজ।
আলোচনার মধ্যে রাজপথের এই কর্মসূচি নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক মহলে। একে অহেতুক চাপ সৃষ্টির চেষ্টা হিসেবে দেখছে অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, কোনো দল মাঠে যদি দাবি উত্থাপন করে আমরাও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তার বিপক্ষে যা বক্তব্য আছে রাজনৈতিক মাঠে ময়দানে দেব।
আরও পড়ুন: পিআর নিয়ে আলোচনার টেবিলে আসুন: সালাহউদ্দিন আহমদ
আর এনসিপি বলছে, সংসদের নিম্নকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের বিষয়টি ছিলো না ঐকমত্য কমিশনের এজেন্ডায়। আলোচনায় না থাকা বিষয় রাজপথে কর্মসূচি দিয়ে চাপিয়ে দেয়া ঠিক হবে না।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, পুরো সংসদ নির্বাচন পিআর পদ্ধতিকে হোক আমরাও এটার সঙ্গে একমত নই। কারণ এই মুহূর্তে বাংলাদেশের বাস্তবতায় তা সম্ভব না এবং জনগণের এ ব্যাপারে প্রস্তুতি নেই। ফলে হুট করে এটি চাপিয়ে দেয়া ঠিক হবে না।
এদিকে, বাম গণতান্ত্রিক জোটের সতর্কবার্তা, নতুন নতুন ইস্যু বা কর্মসূচি নির্বাচনকে ফেলতে পারে শঙ্কায়।
বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবির) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, এই আলোচনা রাজপথে থাকতে পারে। টেবিলে থাকতে পারে। আগামীতে মেন্ডেট অর্জনে থাকতে পারে। কিন্তু নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য যাতে এই ইস্যু ব্যবহৃত না হয় এ ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। নতুন নতুন প্রশ্ন হাজির করে এই নির্বাচনকে যদি প্রশ্নবিদ্ধ করা হয় বা কালক্ষেপণ করা হয় সেটাই আমাদের জন্য সংকটের হবে।
আরও পড়ুন: জাতীয় স্বার্থের বাইরে পিআর চাইলে ভয়ংকর পরিণতি ডেকে আনবে: সালাহউদ্দিন
বিশ্লেষকরা মনে করেন, ধর্মভিত্তিক দলগুলোর মাঠের এই কর্মসূচি নিজেদের রাজনৈতিক শক্তির জানান দেয়ার কৌশল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, তাদের দিক থেকে কৌশলটা হলো এই মুহূর্তে তারা সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে। সব জায়গায় তাদের শক্তির যে একটা জাগরণ ঘটছে। সব জায়গায় ধরার মতো তারা যে একটা শক্তি এই জিনিসটা তারা প্রমাণ করতে চাচ্ছে।
এ অবস্থায় বিভিন্ন ইস্যুতে দলগুলোর পরষ্পরবিরোধী অবস্থান শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে ঠেকে, সেদিকেই নজর পর্যবেক্ষকদের।