ভ্যাপসা গরমে দিশেহারা পটুয়াখালীর মানুষ

২৩ ঘন্টা আগে
পটুয়াখালী জেলায় চলছে মৃদু তাপপ্রবাহ। গরম ও আর্দ্রতার চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন জেলার সাধারণ মানুষ। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী ও কৃষকরা।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) সন্ধ্যা ৬টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ ছিল প্রায় ৮৫ শতাংশ। তীব্র গরম ও আর্দ্রতায় জনজীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ।

 

শুক্রবার (৯ মে) গলাচিপা ও রাঙ্গাবালী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই রোদে পুড়ে কাজ করছেন দিনমজুর, রিকশাচালক ও নির্মাণশ্রমিকেরা। গরমের তীব্রতায় কেউ কেউ বারবার কাজ বন্ধ করে গাছতলা বা টিনের ছাউনি নিচে আশ্রয় নিচ্ছেন।

 

গলাচিপার নির্মাণশ্রমিক আব্দুল কাদের বলেন, ‘সকাল ৯টা বাজতেই রোদের তেজে গায়ের চামড়া পুড়ে যাচ্ছে। কিন্তু কাজ না করলে তো পেট চলবে না। ঘামে ভিজে আবার ঠান্ডা লেগে যাচ্ছে।’

 

শহরের পাশাপাশি গ্রামের কৃষকরাও ভুগছেন তীব্র গরমে। রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজের কৃষক মতিউর রহমান বলেন, ‘টানা রোদের কারণে তরিতরকারি গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। পানি দিচ্ছি, কিন্তু কাজ হচ্ছে না। সবজি নষ্ট হলে তো চাষের টাকা উঠে আসবে না।’

 

আরও পড়ুন: ঘর থেকে বের হতে না দেয়ায় স্বামীর গোপনাঙ্গ কাটলেন স্ত্রী!

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে মাঠের অনেক ফসল রোদে ঝলসে যাচ্ছে। বিশেষ করে শসা, লাউ ও তরমুজের ক্ষতি হচ্ছে। চাষিদের পর্যাপ্ত সেচ ও ছায়ার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।’

 

স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ছে গরমে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. খালেদুর রহমান মিয়া বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়া, হিটস্ট্রোক ও চর্মরোগের রোগী বেড়েছে। শিশু ও বয়স্করাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। আমরা সবাইকে বিশুদ্ধ পানি পান করা ও রোদ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছি।’

 

পটুয়াখালী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু তাপপ্রবাহ আরও অন্তত এক সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে। এ সময় তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করবে। বাতাসে জলীয়বাষ্পের আধিক্য থাকায় ভ্যাপসা গরমে স্বস্তি মিলবে না।

 

গরমের এই প্রবণতায় দিনদিন দুর্ভোগ বাড়ছে জেলার সাধারণ মানুষের। কাজ করতে গিয়ে নাকাল হচ্ছেন শ্রমজীবীরা, আর ঘরে বসেও মিলছে না গরম থেকে রেহাই। এখন শুধু একটিই প্রত্যাশা—একটু বৃষ্টি।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন