ভোরের পাখিদের মুখে আল্লাহর জিকির

৩ সপ্তাহ আগে
ভোর সকালে পাখিদের জিকিরে প্রকৃতি জেগে ওঠে। মানুষ জেগে ওঠে। আর পাখিদের জিকিরেই সূর্য হেসে ওঠে খিলখিলিয়ে। মহান রবের ডাকে পাখিরাই ঘুমন্ত পৃথিবী জাগিয়ে তোলে জিকিরে জিকিরে।

ময়না, টিয়া, কাকাতুয়া, শালিক, টুনটুনি, চড়ুইসহ কত ধরনের, কত রঙের, কত বর্ণের পাখি যে মহান রব সৃষ্টি করেছেন, তার কোনো হিসেব নেই। সবাই মহান রবের কালিমা পাঠ করে। জিকিরে মশগুল থাকে।


আমরা যদিও তাদের কথা বুঝি না, তবে প্রকৃতি তাদের ভাষা বুঝে। ভোর সকালে নরম নরম আলোতে পাখিরা সুরে সুরে আল্লাহ আল্লাহ ডাকে। তাদের ডাকেই জেগে ওঠে মানুষ, জেগে ওঠে গাঁয়ের মেঠোপথ।

 

আরও পড়ুন: বিশ্বের যে দেশে একজনও মুসলিম নেই
 


পাখিরা আল্লাহর জিকির করে। মহাগ্রন্থ আল কোরআনে আল্লাহ বলেন,

 

তুমি কি দেখোনি যে আসমান ও জমিনে যারা আছে তারা এবং সারিবদ্ধ হয়ে উড়ন্ত পাখিরা আল্লাহর তাসবিহ পাঠ করে? প্রত্যেকেই তার সালাত ও তাসবিহ জানে। তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবগত। (সুরা নুর-৪১)


 

পাখিদের জিকিরেই পৃথিবী থেকে সব কালিমা ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায়। মানুষ আল্লাহর নাফরমানি করলেও পশু-পাখি ও প্রকৃতি কখনোই আল্লাহর নাফরমানি করে না। তারা মগ্ন থাকে রবের জিকিরে। প্রেমময় প্রভুর ইবাদতে মশগুল থাকাই তাদের কাজ।


পাখিরা আমাদের জন্য দোয়া করে। আমাদের সওয়াব বৃদ্ধি করে। যখন কোনো পাখিকে আমরা খাবার দেই, অথবা আমাদের কোনো ফল গাছ থেকে কোনো ফল তারা খায়, সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সদকার সওয়াব দান করেন।


হজরত জাবের (রা.) বলেন, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

 

যেকোনো মুসলমান (ফলবান) গাছ লাগায় আর তা থেকে যা কিছু খাওয়া হবে তা তার জন্য সদকা, তা থেকে যা কিছু চুরি হবে তা তার জন্য সদকা, পাখি যা খাবে তাও তার জন্য সদকা এবং যে কেউ এর থেকে কিছু নেবে তাও তার জন্য সদকা। অর্থাৎ সে দান-খয়রাতের সওয়াব পাবে। (বুখারি-২৩২০)


 

শুধু পাখিরাই না, পৃথিবীর যতকিছু আছে, সবকিছুই তো আল্লাহর জিকিরে মত্ত থাকে। আমরা শুনি না, আমরা বুঝি না। আল্লাহ বলেন,

 

সাত আসমান ও জমিন এবং এদের অন্তর্ভুক্ত সব সৃষ্টি তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা করে। এমন কোনো জিনিস নেই, যা তাঁর সপ্রশংস তাসবিহ পাঠ করে না। কিন্তু তোমরা তাদের তাসবিহ পাঠ বুঝতে পারো না। (সুরা বনি ইসরাঈল-৪৪)

 

ভোর সকালের নিয়ন আলোতে পাখিদের জিকিরে আমাদের ঘুম ভাঙে। আমরা নতুন করে একটি সুন্দর ভোর দেখতে পাই। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যে আমরা বিমোহিত হই। এ সবকিছুই কিন্তু আমার মহান রবের তাসবিহ পাঠে ধন্য হয়।

 

আরও পড়ুন: কোরআন হিফজ করতে শিশুদের মারধরের বিষয়ে যা বললেন মুফতি মেঙ্ক

 


আমরা নাফরমানি করি, কিন্তু তারা আকাশে উড়তে, জমিনে চলতে, গাছের ডালে বসে, সব জায়াগাতেই তাদের নিজস্ব ভাষায় আল্লাহর জিকিরে লিপ্ত থাকে।

 

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কোরআনে বলেন,

 

আপনি কি দেখেননি আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে, তারা আল্লাহরই তাসবিহ পাঠ করে এবং পাখিরাও, যারা পাখা বিস্তার করে উড়ছে। প্রত্যেকেরই নিজ নিজ নামাজ ও তাসবিহের পদ্ধতি জানা আছে। (সুরা : নুর, আয়াত : ৪১)

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন