শুক্রবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে দর্শকদের উল্লাস আর উৎসবমুখর প্রতিযোগিতার এই আয়োজন করে অভয়নগর স্পোর্টস ক্লাব।
আয়োজকরা জানান, গোপালগঞ্জ, নড়াইল, মাগুরা ও খুলনাসহ মোট ৮টি নৌকা অংশ নেয় প্রতিযোগিতায়। তালতলা খেয়াঘাট থেকে হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পাশের ফেরিঘাট পর্যন্ত চলে বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টানটান উত্তেজনাপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা। উৎসবমুখর এই আয়োজনে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।
বন্দর নগরী নওয়াপাড়া ভৈরব নদের দু পাড়ে অর্ধলক্ষাধিক নারী-পুরুষ বিভিন্ন সাজে দাঁড়িয়ে নৌকা বাইচ উপভোগ করছেন। অনেকেই নৌকা ও ট্রলার ভাড়া করে এই উৎসব দেখছেন। নৌকা বাইচ উপলক্ষে নদীর দুপাড়েই বসেছে গ্রামীণ মেলা। নাগরদোলা, মুড়ি মুড়কিসহ গ্রামীণ মেলার আবহ সৃষ্টি হয় কয়েক ঘণ্টার এই মেলায়। মেলায় মিষ্টির দোকান, খেলনা ও বিভিন্ন খাবার দোকানের পসরা সাজিয়েছে দোকানিরা। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অঞ্চলের মেয়েদের জামাইরা বউ নিয়ে শ্বশুরবাড়ি এসেছেন। আত্মীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজন নিয়ে মেতে ওঠেন আনন্দে।
আরও পড়ুন: ‘বানৌজা বিশখালি’ যুদ্ধজাহাজ দেখে উচ্ছ্বসিত দর্শনার্থীরা
নৌকা বাইচ দেখতে আসা খুলনার ফুলতলা থেকে আসা খাইরুল ইসলাম বলেন, ভৈরব নদে দীর্ঘদিন ধরে নৌকা বাইচ হয়; মাঝে দু বছর বন্ধ ছিলো; এবার নতুনভাবে হয়েছে। বউ শালী ও শ্যালকদের নিয়ে এই নৌকাবাইচ দেখতে এসেছি। দুধারে মেলা আর নৌকার প্রতিযোগিতা অনেক ভালো লাগছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম বলেন, নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে প্রাণ ফিরে পেয়েছে ভৈরব নদী। প্রতিযোগিতাতা কেন্দ্র করে এলাকায় প্রতিটি বাড়িতেই আত্মীয়তে ভরে গেছে। আত্মীয়স্বজন নিয়ে নৌকাবাইচ দেখতে এসেছি। মেলায় ঘুরে উপভোগ করছি। খুব আনন্দ লাগছে।
মিষ্টি ব্যবসায়ী প্রিয় ধর বলেন, নৌকা বাইচের মেলায় মিষ্টি বিক্রি করতে আসি। মাঝে কয়েক বছর বন্ধ ছিলো; এবার নতুন উদ্যমে শুরু হয়েছে। এবারও মেলায় দোকান দিয়েছি। দোকানে রসগোল্লা, আমৃত্তি, দানাদার, জিলাপিসহ বিভিন্ন মিষ্টি সামগ্রী রয়েছে।
দর্শকরা জানালেন, এ ধরনের আয়োজন সুস্থ বিনোদনের অংশ। ঐতিহ্যের ধারক। প্রতিবছরই এমন আয়োজন হওয়া এবং আয়োজনের সংখ্যা আরও বাড়ানো উচিত।
নৌকা বাইচের আয়োজক অভয়নগর স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি আমানুল্লাহ সাদিক জানান, আটটি দলের মধ্যে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার ‘জয় মা কালি’ নামের নৌকাটি প্রথম স্থান অধিকার করে। এছাড়া টুঙ্গিপাড়ার ‘মোবাইল ব্যাটারি’ নামের নৌকা ২য় এবং মাগুরা জেলার ‘মাগুরা টাইগার’ নামের নৌকাটি ৩য় স্থান অধিকার করেন। পুরস্কার হিসেবে প্রথম বিজয়ী দলকে ৩০ হাজার, ২য় বিজয়ী দলকে ২৫ হাজার এবং ৩য় বিজয়ী দলকে ২০ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভূমিকম্পে হতাহতদের জন্য জামায়াত আমিরের গভীর শোক
প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর) সংসদীয় আসনে জামায়াতে ইসলামি মনোনীত প্রার্থী ও জেলা আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অভয়নগর উপজেলা জামায়াতে ইসলামির আমির সর্দার শরিফ হুসাইন, উপজেলার সাবেক আমির মাওলানা মশিউর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অভয়নগর স্পোর্টস ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা এম এম আশিকুজ্জামান।

২ দিন আগে
২






Bengali (BD) ·
English (US) ·