হাকিমপুরের সীমান্তবর্তী মংলা গ্রামসহ নয়ানগর, বোয়ালদাড় এবং খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়নের কৃষকদের অন্যতম প্রধান জীবিকা পান চাষ। গেল কয়েক বছর ভারত থেকে পান না আসায় স্থানীয় বাজারে পানের চাহিদা বেড়েছিল, ফলে চাষিরা পান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন। তবে চলতি বছরে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পানের ফলন ভালো হলেও বাজারে দাম নেই।
নয়ানগর গ্রামের পানচাষি রাশেদুল ইসলাম বলেন, একে তো পানের দাম নেই, তার ওপর ক্রেতা সংকট। গত বছর মোটা পান প্রতি পোয়া (৪০ বিরা) ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিলাম, এবার সেই পানের দাম ১ হাজার ২০০ টাকা। আর চিকন পান তো মাত্র ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ এক পোয়া পান তুলতেই শ্রমিককে দিতে হচ্ছে ২০০ টাকা। এমনও হয়েছে, হাটে পানের গাদি ফেলে আসতে হয়েছে।
চাষিরা জানান, পানের উৎপাদন খরচ অনেক। খৈল, বাঁশ ও অন্যান্য উপকরণের দাম বাড়ায় খরচ বেড়েছে। অথচ বিক্রির সময় দাম মিলছে না।
একই গ্রামের আরেক পানচাষি দেলোয়ার বলেন, এক বিঘা জমিতে পান চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ৩ লাখ টাকা। এখন বাজারে পানের এমন অবস্থা যে সেই খরচ তোলার কোনো সম্ভাবনাই নেই। শ্রমিকের মজুরি উঠছে না। সরকার যদি কিছু ভর্তুকির ব্যবস্থা করত, তাহলে আমরা উপকৃত হতাম।
আরও পড়ুন: ঝালকাঠিতে ৫ কৃষকের পানের বরজ পুড়িয়ে দিলো দুর্বৃত্তরা
শুধু কৃষকরাই নয়, সংকটে পড়েছেন পান বরজে কাজ করা শ্রমিকরাও। বরজে কাজ করা সিরাজুলসহ কয়েকজন শ্রমিক বলেন, এক পোয়া পান তোলার মজুরি ২০০ টাকা, অথচ বাজারে সেই পান বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। মালিকরা টাকা দিতে পারছেন না, আমরাও ঠিকমতো আয় করতে পারছি না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম বলেন, হাকিমপুর উপজেলায় বর্তমানে ৪০ হেক্টর জমিতে পান চাষ হচ্ছে। খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি পান চাষ হয়। লাভজনক হওয়ায় বোয়ালদাড় ইউনিয়নেও কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছেন পান চাষে। কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। তবে পানের দামের বিষয়টি কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের আওতায়। যদি বিপণন ব্যবস্থায় সংস্কার আনা হয়, তাহলে কৃষকরা আরও উপকৃত হবেন।