মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকাল চট্টগ্রামের এভার কেয়ার হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছে পরিবার।
রহিন উদ্দিন সিকদার ভারুয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুর রহমানের ভাই । তিনি জানান, গত রোববার (১৩ জুলাই) রাতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে তার আপন ভাইদের মারধর করা হয়। পরে মুমূর্ষ অবস্থায় তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আনা হয়। এসময় রহিম সিকদারের অবস্থা অবনতি হওয়ায় তাকে চট্রগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে মঙ্গলবার সকালে তার মৃত্যু হয়।
হামলার বিষয়ে শফিকুর রহমান বলেন, ‘আব্দুল আল নোমান, তার জামাতা মিজান, মুজিব এবং এনাম নামের স্থানীয়রা মিলে হামলা চালায় আমার ভাইদের উপর।’
তিনি দাবি করেন, হামলার সঙ্গে প্রধান অভিযুক্ত আব্দুল আল নোমান স্থানীয় ফাতেরঘোনা ইউনিট জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি।
এদিকে মৃত্যু হওয়া রহিম উদ্দিন সিকদার বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন বলে জানান জেলা যুবদলের সভাপতি সৈয়দ আহম্মেদ উজ্জল। তিনি বলেন, ‘রহিম উদ্দিন ভারুয়াখালী ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি, বর্তমানে ইউনিয়ন বিএনপি'র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।’
তিনিও দাবি করেন, অভিযুক্ত আব্দুল আল নোমান ফাতেরঘোনা ইউনিট জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি।
আরও পড়ুন: আদালতে শুনানির সময় আইনজীবীর মৃত্যু
অন্যদিকে কক্সবাজার জেলা জামায়াতের দাবি, গত ১৩ জুলাই কক্সবাজার সদর উপজেলা ভারুয়াখালী ইউনিয়নে মসজিদের জমি দখলকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ঘটনায় নিহত আবদুর রহিম হত্যার সঙ্গে জামায়াতের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। প্রকাশিত সংবাদ ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া তথ্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন কক্সবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জাহিদুল ইসলাম।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘১৩ জুলাই ভারুয়াখালীতে সংঘটিত ঘটনাটি মসজিদের জমি দখল কে কেন্দ্র করে এলাকার দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘটিত ঘটনার সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে দূরতম সম্পর্ক নেই। প্রকৃত ঘটনা কে আড়াল করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে জামায়াতকে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশ অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত। আমরা এ ধরনের উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ পরিবেশন থেকে সংশ্লিষ্ট সকলকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। আমি আবদুর রহিমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি। শোকাহত পরিবার-পরিজনের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। রাজনৈতিক দোষারোপ না করে সংঘটিত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক প্রকৃত অপরাধীকে চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান করছি ‘
তবে একাধিক বিএনপি নেতাকর্মী এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা অভিযুক্তকে জামায়াত নেতা দাবি করেছেন এবং রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তার বিভিন্ন ছবি সরবরাহ করেছেন।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে একসঙ্গে বিষপানে মেয়ের মৃত্যু, মা হাসপাতালে
কক্সবাজার সদর থানার ওসি মোহাম্মদ ইলিয়াস খান রহিম সিকদারের মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে পরিবারের পক্ষে লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এরপরও পুলিশ ঘটনায় জড়িতের ধরতে অভিযান শুরু করেছে। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত মিজানকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে আনা হয়েছে। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
]]>