ভারতের ভাইরাল সেই ‘চলমান-খাট’ নিয়ে গেল পুলিশ

১ সপ্তাহে আগে
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সেই চলমান খাটটি জব্দ করেছে ভারতের মুর্শিদাবাদের ডোমকল থানা পুলিশ। মোটর ভেহিকলস আইন অনুযায়ী, কোনো গাড়ি এভাবে বদলে ফেলে চালানোর অনুমতি নেই। তাই এটি জব্দ করা হয়েছে।

ভাইরাল সেই ভিডিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি বিছানার মাঝখানে বসে আছেন, আর তোষক, চাদর, বালিশসহ পুরো খাটটাই চলছে– ঠিক যেন একটা গাড়ি। আসলেই এটা চলমান বিছানা কিংবা খাট-গাড়ি।

 

বিবিসি বাংলার খবরে উল্লেখ করা হয়, পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা নবাব শেখ প্রায় দেড় বছরের পরিশ্রমে এই খাট-গাড়িটি বানিয়েছেন। ঈদের দিন নিজের বিচিত্র এই গাড়িটি নিয়ে একটু ‘ট্রায়াল’ দিতে বেরিয়ে ছিলেন তিনি।

 

মুহূর্তেই সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। চলমান-বিছানা গাড়ি দেখতে ব্যাপক ভিড়ও হচ্ছিল। এরপরই মুর্শিদাবাদের ডোমকল থানা পুলিশ নবাব শেখের সেই সাধের গাড়িটি থানায় নিয়ে যায়।

 

মোটর ভেহিকলস আইন অনুযায়ী, কোনো গাড়িকে এভাবে বদলে ফেলে চালানোর অনুমতি যে ছিল না নবাব শেখের।

 

‘খাটে চড়ে যদি চা খেতে যেতে পারতাম’

 

ভাইরাল হওয়ার নেশায় মানুষ যে কত কিছু করেন, নবাব শেখের গাড়ি-বিছানা তার একটা উদাহরণ। ভাইরাল হওয়ার স্বপ্ন তো ছিলই, তার সঙ্গেই ছিল বিছানায় বসে চায়ের দোকানে চা খেতে যাওয়ার স্বপ্নও।

 

‘আমি ঘুমের মধ্যেই একদিন স্বপ্ন দেখি যে খাটে চেপেই যদি আমি চা খেতে যেতে পারতাম! সেই ভাবনা থেকেই শুরু, বলছিলেন নবাব শেখ। এরপরে তিনি খাটটিতে চারটি চাকা লাগান। সেটি ধাক্কা দিলে এগোচ্ছে, কিন্তু এমনিতে সেটি নড়াচড়া করছে না!


তার কথায়, ‘এরপরে আমি ওটাতে একটা ইঞ্জিন ফিট করে চলন্ত খাট বানাই। ঈদের দিন একটু ট্রায়াল দিতে বেরিয়েছিলাম। আমার কয়েকজন বন্ধু সেটার দুটো ভিডিও করে। সেটা আমি আমার ফেসবুক পেজে দিয়েছিলাম।’

 

কীভাবে বানান হলো চলমান-খাট?

 

নবাব শেখের এক ভাই আলমগীর শেখও চলমান-খাট বানানোয় তাকে সহায়তা করেন। প্রায় দেড় বছর ধরে দুই লাখ ১৫ হাজার টাকা খরচ করে একে একে ইঞ্জিন, স্টিয়ারিং, তেলের ট্যাংক আর স্থানীয় একটা গাড়ি সারানোর কারখানা থেকে একটি গাড়ির খাঁচাও কেনেন তিনি।


আলমগীর শেখ বলেন, ‘নবাব ভিডিও কনটেন্ট বানায় আগে থেকেই। প্রথমে আইডিয়াটা ওর মাথায় আসে। পরে আমাদের জানায়। কাঠের কাঠামো তো আছেই, তাতে ৮০০ সিসি ইঞ্জিন লাগানো হয়েছে। আর মারুতি ওমনি গাড়ির চেসিস ব্যবহার করা হয়েছে।’


পেশায় গাড়িচালক নবাব শেখ মাসে মোটামুটি ৯ হাজার ভারতীয় টাকা আয় করেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, এই চলমান-খাট বানাতে স্ত্রীর কিছু গয়না বিক্রি করতে হয়।

 

চলমান-খাট দেখতে রাস্তায় ভিড় জমে যাওয়ায় প্রথমে পুলিশের পক্ষ থেকে গাড়িটি রাস্তায় না চালানোর কথা বলা হয়েছিল। তারপর সেটি শেখ পরিবারের গুদামে রাখা ছিল। কিন্তু এ ধরনের গাড়ি চালানোর আইনি অনুমতি না থাকায় পুলিশ খাট-গাড়িটি থানায় নিয়ে গেছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন