ভারতের নিষেধাজ্ঞায় বেনাপোলে আটকা পণ্যবাহী শতাধিক ট্রাক

ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় বেনাপোল স্থলবন্দরে আটকা পড়েছে রফতানিমুখী গার্মেন্টসসহ কয়েক প্রকার পণ্যের শতাধিক ট্রাক। এর আগে তাদের নিষেধাজ্ঞায় সড়ক পথে বন্ধ হয় ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে পোশাক রফতানি।

তবে স্থলপথে পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কলকাতা ও নবসেবা সমুদ্রবন্দরের মাধ্যমে পণ্য আমদানির সুযোগ রাখা হয়েছে।


এদিকে একের পর এক নিষেধাজ্ঞায় পণ্য পরিবহন ব্যয়বহুল হয়ে পড়ায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে রফতানি বাণিজ্য। অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন দুই দেশের ব্যবসায়ীরা। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে বাণিজ্য স্বাভাবিকের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

আরও পড়ুন: পেট্রাপোলে সার্ভার জটিলতা / বেনাপোল স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি ব্যাহত, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

বাণিজ্যিক সংশিষ্টরা জানান, দেশের ২৪ টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি ও রফতানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় ৮০ শতাংশ বাণিজ্য হয় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য রফতানি হয়। যার মধ্যে শতাধিক ট্রাকে থাকে গার্মেন্টস শিল্পের তৈরি পোশাক। তবে হঠাৎ করে ভারত সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শনিবার একটি প্রজ্ঞাপনে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্টস শিল্পের তৈরি পোশাক, সুতা, প্লাস্টিক, কাটের তৈরি পণ্য এবং ফল ও ফল জাতীয় পণ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। এতে বেনাপোল বন্দরে আটকা পড়েছে এসব পণ্য।  


তবে ভারতের নবসেবা ও কলকাতা বন্দর দিয়ে পণ্য রফতানির সুযোগ রাখলেও ওইসব বন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা কঠিন ও ব্যয়বহুল হওয়ায় ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যে আগ্রহ কমেছে। 


বেনাপোল বন্দরে আটকে থাকা রফতানি পণ্যবাহী ট্রাক চালকরা বলেন, ‘আগের পণ্য রফতানির সুযোগ থাকলেও নতুন করে বন্দরে আসা গার্মেন্টস পণ্য নিয়ে আটকা পড়েছি। শেষ পর্যন্ত কী হবে জানি না।


রফতানিকারক ইদ্রিস আলী বলেন, ‘কলকাতা ও নবসেবা সমুদ্র বন্দর দিয়ে রফতানি কঠিন ও ব্যয়বহুল। আটকে পড়া রফতানি পণ্য নিয়ে বিপাকে পড়েছি।’

আরও পড়ুন: পণ্য আমদানিতে ভারতের বিধিনিষেধ প্রসঙ্গে যা জানালেন বাণিজ্য উপদেষ্টা
 

বেনাপোল আমদানি,রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, ‘শনিবার (১৭ মে) ভারত সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অজয় ভদ্র স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্টস, তুলা, সুতির বর্জ্য, কার্ড ও প্লাস্টিক ও কার্ডের তৈরি আসবাবপত্র, ফল জাতীয় পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার পর বেনাপোল বন্দরে শতাধিক রফতানিমুখী গার্মেন্টস পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে। ভারত সরকারকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে বাণিজ্য সহজ করার দাবি জানাচ্ছি।’


বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম জানান,
হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও সৌহার্দ্য সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। এত ক্ষতির শিকার দুই দেশের ব্যবসায়ীরা। 


বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখার সুপারিনটেন্ডেন্ট আশরাফ আলী রোববার (১৮ মে) বিকেল ৩ টায় বলেন, ‘ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার পর সকাল থেকে কোনো গার্মেন্টস শিল্পের পণ্য ভারতে ঢোকেনি। তবে বেশ কিছু ট্রাক বন্দর ও বন্দর সড়কে দাঁড়িয়ে আছে জানতে পেরেছি।’

]]>