এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
চলতি বছর জুলাই মাসে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে চতুর্থবারের মতো নেপালের ক্ষমতায় আসেন কেপি শর্মা ওলি। প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরের জন্য প্রথা ভেঙে শত বছরের মিত্র দিল্লির বদলে বেইজিংকে বেছে নেন তিনি।
চীনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠকে হওয়ার কথা রয়েছে ওলির। এর আগে, স্থলবেষ্টিত (ল্যান্ডলকড) দেশ নেপালকে ‘স্থল সম্পর্কযুক্ত’ (ল্যান্ড লিংকড) দেশের রূপান্তরিত করার অঙ্গীকার করেছিলেন জিনপিং।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে এলো নেপালের বিদ্যুৎ
২০১৭ সালে চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনফ্রাস্টাকচার ইনিশিয়েটিভে’ স্বাক্ষর করে কাঠমাণ্ডু। তবে প্রকল্প কাঠামো দাঁড় করানো হলেও এখনও কোনো কিছু বাস্তবায়িত হয়নি বলে জানিয়েছে তারা। উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিবেশীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে প্রথাগত ভারত-নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ওলি।
অবশ্য নেপালের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে চীনের চেয়ে ভারতের প্রভাবই বেশি। যেখানে কাঠমাণ্ডুর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে দিল্লির হিস্যা প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ, সেখানে বেইজিংয়ের আছে মাত্র ১৪ শতাংশ। তবে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অন্যদিক দিয়ে এগিয়ে গেছে চীন। নেপালে তাদের অর্থায়নের পরিমাণ ৩১ কোটি মার্কিন ডলার, যা ভারতের চেয়ে অন্তত তিন কোটি বেশি।
আরও পড়ুন: নেপালের ভূখণ্ডে চীনের সামরিক বাহিনী!
২০১৬ সালে ওলি ক্ষমতায় থাকাকালীন নেপালে তেল রফতানি ছ’মাসের জন্য স্থগিত করেছিল ভারত। তিনি তৎক্ষণাৎ চীনের সঙ্গে জ্বালানি তেল সংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। ওই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে নেপালের একমাত্র জ্বালানি সরবরাহকারীর তকমা হারায় ভারত। আর চীনের সঙ্গে সহযোগিতার নতুন পথ উন্মোচিত হয়।
এরপর থেকে নেপালে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে চীন। রাজধানীর ২০০ কিলোমিটার পশ্চিমে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর পোখারাতে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণে ২১ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে তারা। বিমানবন্দরটি গত বছর থেকে কার্যক্রম শুরু করলেও ভারতের নিজেদের আকাশসীমা ব্যবহারে আপত্তির কারণে পর্যাপ্ত আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পাচ্ছে না তারা।
আরও পড়ুন: পৃথিবীর সবগুলো সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ জয় নেপালি কিশোরের
এদিকে, চীনা ঋণ নিয়ে নেপালের আন্তর্জাতিক মহলে রয়েছে বিতর্ক। ওলির নিজের দল কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপালের (ইউনিফায়েড মার্ক্সিস্ট লেনিনিস্ট) মধ্যে বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের জন্য চীনা অনুদানের বদলে ঋণদান নিয়ে আপত্তি রয়েছে।
বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের এই অঞ্চলের এক মুখ্য অংশীদার ছিল শ্রীলঙ্কা। ২০২২ সালের মে মাসে দেশটি দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার ফলে চীনা ঋণের বিষয়ে এক ধরনের উদ্বেগ রয়ে গেছে।
]]>