প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংঘাতের কারণে ভারত ও পাকিস্তান এরই মধ্যে নানা অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। এছাড়া এই সংঘাতের ব্যয়ও কম নয়। প্রধানত বিমান হামলা, বিস্তৃত ড্রোন মোতায়েন এবং ব্যাপক যুদ্ধের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে ব্যয় হচ্ছে।
ভারতীয় বিমান বাহিনী রাফাল, মিরাজ ২০০০, সুখোই ও তেজস যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে প্রতিদিন আনুমানিক প্রায় ১০০টি অভিযান পরিচালনা করছে। এর প্রতিটি অভিযানের খরচ আনুমানিক ৮০ হাজার ডলার।
স্কাল্প ইজি, স্পাইস ২০০০ ও হ্যামারের মতো প্রেসিশন গাইডেড মিউনিশন এবং অন্যান্য লেজার গাইডেড বোম দিয়ে প্রতিদিন আনুমানিক ৩০ থেকে ৪০টি মিউনিশন ব্যবহার করছে। যার প্রতিটির দাম ১ লাখ থেকে ১১ লাখ ডলার। এভাবে চার সপ্তাহে খরচ পড়বে প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার।
আরও পড়ুন: ভারতের ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র গুদাম গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, দাবি পাকিস্তানের
এছাড়া ভারতের পক্ষ থেকে হ্যারপ, হেরন ও সার্চার ড্রোন মিলিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩০টি ড্রোন হামলা চালাচ্ছে। পরিচালনা করা হচ্ছে ড্রোন ধ্বংস ও প্রতিস্থাপন, স্যাটেলাইট ব্যান্ডউইথ, নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র ও জ্যামিং প্রযুক্তি। এর ফলে প্রতিদিন খরচ হচ্ছে প্রায় ১০ কোটি ডলার। চার সপ্তাহে এই খরচ পৌঁছাতে পারে ৩ বিলিয়ন ডলারে।
এছাড়া প্রতিদিন ভারত থেকে ১০টি ব্রহ্মস সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ১০ থেকে ২০টি প্রলয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছে। এতে দৈনিক খরচ হচ্ছে প্রায় ১৫ কোটি ডলার। চার সপ্তাহে সেটা দাঁড়ায় প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন ডলার।
সেনা মোতায়েন, জ্বালানি খরচ, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও নৌবাহিনীর প্রস্তুতির কারণে প্রতিদিন ভারতের গড়ে খরচ হচ্ছে ১১ কোটি ডলার। এই খাতে চার সপ্তাহের ব্যয় প্রায় ৫.৪ বিলিয়ন ডলার।
পাকিস্তানেরও বিপুল পরিমাণে সামরিক ব্যয় হয়েছে। বিমান বাহিনীর হামলা ও টহলে প্রতিদিন খরচ হচ্ছে আড়াই কোটি ডলারের বেশি। এতে চার সপ্তাহে ব্যয় হবে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার। ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের খরচ ধরা হয়েছে ৪৫ কোটি ডলার।
আরও পড়ুন: ভারতে হামলার পর যা বললেন শেহবাজ শরিফ
বিপরীতে পাকিস্তানের সীমান্ত সতর্কতা, সেনা চলাচল, রাডার চালু রাখা, এসএএম মোতায়েন ও গোয়েন্দা তৎপরতার পেছনে প্রতিদিন ব্যয় হচ্ছে আনুমানিক ১৫ কোটি ডলার। এতে চার সপ্তাহে ব্যয় হবে ৪৫ কোটি ডলার।
সরাসরি সামরিক ব্যয়ের বাইরেও দুই দেশের অর্থনীতিতে পড়ছে গভীর প্রভাব। ভারতের ক্ষেত্রে জিডিপির ক্ষতির পরিমাণ হতে পারে ১৫ বিলিয়ন ডলার, মুদ্রা ও বাজার অস্থিরতায় ৯০ বিলিয়ন ডলার, বাণিজ্য ও সরবরাহ ব্যবস্থার ক্ষতি ৮০ বিলিয়ন ডলার এবং বিদেশি বিনিয়োগ ১০০ বিলিয়ন ডলার কমতে পারে।
পাকিস্তানের ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা কম হলেও তা একেবারেই কম নয়। জিডিপি ক্ষতি হতে পারে ২৫ বিলিয়ন ডলার, বাজার অস্থিরতা ও মুদ্রার দরপতন ১৫ বিলিয়ন ডলার, বাণিজ্য ও সরবরাহ ব্যবস্থা ১২ বিলিয়ন ডলার এবং বিনিয়োগ ও আইএমএফ ঋণ সম্পর্কিত ক্ষতি হতে পারে ৫ বিলিয়ন ডলার।
পুরো ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় নিলে আগামী চার সপ্তাহে দুই দেশের সামরিক ব্যয় ৫০০ বিলিয়ন বা ৫০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
]]>