মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেল ৫টার দিকে ভারতের পেট্রাপোল চেকপোস্ট দিয়ে তাদের বেনাপোল চেকপোস্টে হস্তান্তর করা হয়।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসন, সমাজসেবা কার্যালয় ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধি।
ফেরত আসা ৩৬ জনের মধ্যে ১৪ জন মেয়ে ও ২২ জন ছেলে। এদের মধ্যে রয়েছে যশোরের আপন চন্দ্র সিংহ, আসমা খাতুন; রাজশাহীর আসমাউল হোসেন; নোয়াখালীর বিউটি রানী দেবনাথ; খুলনার রহমত আলী, জিয়াউর রহমান, রাখি সানা, আয়াত মোড়ল, রিমি মোড়ল; মুন্সিগঞ্জের তহমিনা আক্তার; বাগেরহাটের শাকিল হাওলাদার; গোপালগঞ্জের সম্রাট গুপ্ত, আকাশ হক; কুড়িগ্রামের শাহিনুর আলম, হানিফ আলী; নাটোরের দেবজিৎ রায়; দিনাজপুরের রাসেল বাবু, ফারিয়া খান; সাতক্ষীরার ইব্রাহিম; ময়মনসিংহের সফর শেখ; নড়াইলের আব্দুস সবুর; কক্সবাজারের আল আমিন, সালমা; ঢাকার সাজেদা ইয়াসমিন মুন্নি, জোহরা বেগম; নেত্রকোনার নাজমা খাতুন; রংপুরের ধিমান বারুই; মাদারিপুরের শ্রাবণ হোসেন, মিলি আক্তার; নরসিংদীর রিফাত হোসেন; ঠাকুরগাঁওয়ের রিদয় রায়; লক্ষ্মীপুরের সুমাইয়া আক্তার; চট্টগ্রামের একজন; ও পঞ্চগড়ের প্রিয়ন্তি রায়।
পাচারের শিকার এসব শিশু-কিশোরকে গ্রহণ করে আইনি সহায়তা দিচ্ছে চারটি এনজিও— জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার, মহিলা আইনজীবী সমিতি, রাইটস ও মানব উদ্ধার এবং শিশু সুরক্ষা সংস্থা।
জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে তারা ভারতে প্রবেশের সময় ভারতীয় পুলিশের হাতে আটক হয়। পরে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সরকারি হোমে তাদের আশ্রয় দেওয়া হয়। আটক থাকার সময় কারও কারও সেখানে কাটে দুই থেকে আট বছর পর্যন্ত। তাদের বয়স ১০ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে।
আরও পড়ুন: পাচারের শিকার ৩৫ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাচ্ছে ভারত
ভারত-বাংলাদেশ সরকারের যৌথ প্রচেষ্টায় স্বদেশ প্রত্যাবাসন চুক্তির আওতায় এসব শিশু-কিশোরদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
চট্টগ্রামের পটিয়ার এক বাবা ইয়াহিয়া জানান, তার মেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়তো। চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে একটি দালাল চক্র তাকে ভারতে পাচার করে বিক্রি করে দেয়। তিনি মেয়েকে নিতে বেনাপোল সীমান্তে এসেছেন।
মানব উদ্ধার ও শিশু সুরক্ষা সংস্থার চেয়ারম্যান সৈয়দ খায়রুল আলম জানান, তাদের হিসাবে পাচারের শিকার হয়ে ভারতে অবস্থান করছে প্রায় ৫০ হাজার নারী-পুরুষ। আজ যারা ফিরেছেন, তাদের মধ্যে ছয়জনকে পুলিশের কাছ থেকে আইনি সহায়তার জন্য গ্রহণ করেছে তাদের সংস্থা।
তিনি বলেন, ‘কেউ প্রেমের ফাঁদে পড়ে, কেউ চাকরির আশায় ভারতে গিয়ে পাচারের শিকার হয়েছেন। পরে তাদেরকে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে বাধ্য করা হয়।’
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শাহাদৎ হোসেন বলেন, ‘আজ ৩৬ জন বাংলাদেশি ফেরত এসেছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
]]>