মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) লোকসভা অধিবেশনে বক্তব্য দেয়ার সময় এসব কথা বলেন ভারতের এই কূটনীতিক। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
জয়শঙ্কর বলেন, পূর্ব লাদাখের কিছু অংশ নিয়ে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে চলা সংঘর্ষের কারণে ভারত ও চীনের সম্পর্ক স্বাভাবিক ছিল না। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে যথেষ্ট। এই প্রথমবারের মতো বৈরিতা ভুলে দুদেশের বন্ধন দৃঢ় হয়েছে। নিরলস কূটনৈতিক তৎপরতা এই সম্পর্ককে উন্নতির দিকে নিয়ে গেছে বলে জানান জয়শঙ্কর।
আরও পড়ুন:মুখোমুখি ভারত ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, এশিয়ায় নতুন কূটনৈতিক সমীকরণ?
জয়শঙ্কর বলেন, ‘ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত সমস্যার একটি ন্যায্য, যুক্তিসঙ্গত এবং পারস্পরিকভাবে গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছানোর জন্য চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখবে ভারত।’
জয়শঙ্কর বলেন, ‘যদিও এটা স্পষ্ট যে, আমাদের সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতার আলোকে সীমান্ত সমস্যা সমাধানে আরও মনোযোগ দিতে হবে।’ এ বিষয়ে তিনি তিনটি মূলনীতির কথা বলেছেন; যা যে কোন পরিস্থিতিতে মেনে চলতে হবে।’
এই তিনটি মূলনীতি হলো:
এক, উভয় পক্ষকেই কঠোরভাবে এলএসি (লাইন অব একচুয়াল কন্ট্রোল) মেনে চলতে হবে এবং সম্মান করতে হবে।
দুই, কোন দেশেরই একতরফাভাবে ‘স্টাটাস কো’ (একটি দেশের স্থিতাবস্থা) পরিবর্তন করার চেষ্টা করা উচিত নয়।
তিন, অতীতে পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে যেসব চুক্তি এবং সমঝোতা হয়েছে তা সম্পূর্ণরূপে মেনে চলা।
এ সময় জয়শঙ্কর আরও বলেন, ‘আপনারা মনে করলে দেখবেন, ২০২০ সালের এপ্রিল-মে মাসে পূর্ব লাদাখে এলএসি (প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা) বরাবর চীন বিপুল সংখ্যক সৈন্য মোতায়েন করে। ফলে আমাদের বাহিনীর সঙ্গে বেশ কয়েকটি পয়েন্টে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
‘এটি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর কৃতিত্ব যে, লজিস্টিক চ্যালেঞ্জ এবং সেই সময়ে কোভিড পরিস্থিতি সত্ত্বেও তারা দ্রুত এবং কার্যকরভাবে পাল্টা সেনা মোতায়েন করতে সক্ষম হয়েছিল’, বলেন জয়শঙ্কর।
সামরিক কমান্ডারদের বেশ কয়েকটি বৈঠকসহ সেই কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে কাজ হয়েছে। ২৯ আগস্ট হয়েছে সর্বশেষ বৈঠক যার ফলশ্রুতিতে অক্টোবর চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তির অধীনে ভারতীয় ও চীনা সৈন্যরা নিজ নিজ অবস্থানে ফিরে আসে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ ইস্যুতে মোদির সঙ্গে আলোচনা, সংসদে ব্রিফ করবেন জয়শঙ্কর
চুক্তিটি ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাশিয়া সফরের কয়েক ঘন্টা আগে ঘোষণা করা হয়েছিল। যেখানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও উপস্থিত ছিলেন। মোদির সেই সফরকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর শান্তি ও সহনশীলতা পুনরুদ্ধারের একটি রোডম্যাপ হিসাবে দেখা হয়েছিল।