রিও ডি জেনিরোজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে মাদক ও চোরাচালানের জাল। এর পিছনে আছে ‘কমান্ডো ভার্মেলহো’ নামে কুখ্যাত এক অপরাধচক্র। রাজ্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রিও’র আলেমাও ও পেনা ফাভেলা বস্তি এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান শুরু করে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) শুরু হয় এই অভিযান। তবে অভিযানের শুরুতেই সংঘর্ষ ঘটে। তাতে চারজন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৬৪ জন নিহত হয়। পরে মৃতের সংখ্যা আরও বেড়েছে।
এপি ও এএফপির প্রতিবেদন অনুসারে, বুধবার (২৯ অক্টোবর) স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, অভিযানে অন্তত ১৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটা ব্রাজিলের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ পুলিশ অভিযান।
এএফপির প্রতিবেদন মতে, মাদক চোরাচালান ও সংগঠিত অপরাধচক্রের বিরুদ্ধে বিশেষ পদক্ষেপ ‘অপারেশন কনটেইনমেন্ট’-এর অংশ হিসেবে এ অভিযান চালানো হয়। সাঁজোয়া যান, ড্রোন ও হেলিকপ্টার নিয়ে প্রায় ২ হাজার ৫০০ পুলিশ সদস্য এই অভিযানে অংশ নেন।
আরও পড়ুন: লুলা দা সিলভার দাবি / ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র-ব্রাজিল বাণিজ্য চুক্তির ‘নিশ্চয়তা’ দিয়েছেন
রিও রাজ্যের পুলিশ সচিব ফেলিপ কুরি জানান, সেখানকার জঙ্গলের একটি এলাকায় আরও মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। তাঁর দাবি, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করার সময় মাদক কারবারের সঙ্গে যুক্তরা ছদ্মবেশী পোশাক পরেছিলেন। অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে কত জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা জানানো হয়নি।
রিওর গভর্নর ক্লাউদিও কাস্ত্রো জানান, তিনি নিশ্চিত যে অভিযানে নিহতরা সবাই অপরাধী। কারণ সংঘর্ষ এবং গুলির লড়াইয়ের সময়ে তাদের বেশিরভাগ অংশই বনভূমিতে ছিল। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না যে সংঘর্ষের দিন কেউ বনে হেঁটে বেড়াবে।’
এদিকে বিপুল সংখ্যক প্রাণহানির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ব্রাজিলের কেন্দ্রীয় আইন ও বিচারমন্ত্রী রিকারদো লেভানদোভস্কি ‘প্রাণঘাতী’ এই অভিযান চালিয়েছে রিওর রাজ্য কর্তৃপক্ষ। এর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কোনো সহায়তা চায়নি তারা। কী ঘটেছে তা গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জেনেছেন তিনি।
আইন ও বিচারমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা ডা সিলভা বিপুল প্রাণহানি দেখে ‘অবাক’ হয়েছেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে আগে থেকে না জানানোয় তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন: ভেনেজুয়েলার আরও কাছে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ, উদ্দেশ্য কী?
রয়টার্স জানিয়েছে, রিওতে গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানগুলো সামনে রেখে পুলিশ প্রায়ই অপরাধী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করে। ব্রাজিলের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরটি ২০১৬-এর বিশ্ব অলিম্পিক, ২০২৪ সালে জি২০ শীর্ষ সম্মেলন ও চলতি বছরের জুলাইয়ে ব্রিকস সম্মেলনের আয়োজন করেছিল।
আগামী সপ্তাহে রিওতে জলবায়ু সংকট মোকাবেলা নিয়ে বিশ্বের প্রধান শহরগুলোর মেয়রদের শীর্ষ সম্মেলন ‘সি৪০’ ও ব্রিটিশ যুবরাজ উইলিয়ামের ‘আর্থশট পুরস্কার’ প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। প্রিন্স উইলিয়ামের ওই অনুষ্ঠানে পপ তারকা কাইলি মিনোগ এবং ফর্মুলা ওয়ানের চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন সেবাস্তিয়ান ভেটেলের মতো খ্যাতিমানদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
চলতি বছরের ১০-২১ নভেম্বর পর্যন্ত ব্রাজিলের আমাজন নদীতীরবর্তী বন্দর শহর বেলেমে জাতিসংঘের জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন সিওপি৩০ অনুষ্ঠিত হবে। রিও ডি জেনিরোতে অনুষ্ঠানগুলো সিওপি৩০-এর প্রস্তুতির অংশ।
]]>
৩ সপ্তাহ আগে
৯







Bengali (BD) ·
English (US) ·