মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪৫ ওভার ৫ বলে ২২৭ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৩ ওভার ১ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এই জয়ে ১০ বছর পর বাংলাদেশকে ঘরের মাঠে সিরিজ হারাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০১৪ সালে সর্বশেষ নিজেদের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছিল উইন্ডিজ। এবার ভাঙল সেই গেরো।
রান তাড়ায় শুরু থেকেই সাবলীল ক্রিকেট খেলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুরুতে দেখেশুনে খেলে ধীরে ধীরে রানের গতি বাড়িয়েছেন দুই ওপেনার এভিন লুইস এবং ব্রেন্ডন কিং। উদ্বোধনী জুটিতে দুজনে মিলে গড়েন ১০৯ রানের জুটি। এই জুটিতেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ।
৪৯ রান করে রিশাদ হোসেনের বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন লুইস। তবে কোনো চাপই আসতে দেননি কিং। তিনে নামা কেসি কার্টিকে নিয়ে ৬৬ রানের জুটি গড়েন তিনি। দলীয় ১৭৫ রানে নাহিদ রানার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন কিং। ৭৬ বলে ৩ ছক্কা ও ৮ চারে ৮২ রান করেছেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
আরও পড়ুন: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এখন কক্সবাজারে, প্রদর্শিত হবে সৈকতে
কার্টিকে ফেরান আফিফ হোসেন। ফিফটি থেকে পাঁচ রান দূরে থাকতে আউট হন কার্টি। তবে চতুর্থ উইকেটে শেরফান রাদারফোর্ড এবং শাই হোপ মিলে ৩৩ রানের জুটি গড়ে দ্রুতই দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। হোপ অপরাজিত ছিলেন ১৭ রানে। রাদারফোর্ডের ব্যাট থেকে আসে ২৪ রান।
সেন্ট কিটসের দুর্দান্ত ব্যাটিং উইকেটে এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। ৫ বলে মাত্র ২ রান করে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সৌম্য সরকার। পরের দুই ব্যাটার লিটন দাস এবং মেহেদী মিরাজও অনুসরণ করেছেন সৌম্যকে। লিটন করেছেন ১৯ বলে ৪ রান আর ৫ বলে ১ রান করেছেন অধিনায়ক মিরাজ। শুরুটা ভালো করলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তানজিদ তামিম। ৩৩ বলে ৪৬ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে জেইডন সিলসের বলে আউট হন তিনি।
এরপর কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে দলের খাতায় ১০০ রান যোগ হওয়ার পর ভুল শট খেলে দলকে আবার চাপে ফেলেন আফিফ। ২৯ বলে ২৪ রান করে ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। এরপর ৮ বল খেললেও রানের খাতা না খুলেই বিদায় নেন রিশাদ। দলীয় ১১৫ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ক্রিজে তখন একমাত্র স্বীকৃত ব্যাটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শঙ্কা জেগেছিল, ১২৫ কিংবা ১৩০ রানের মধ্যে ইনিংস গুটিয়ে যাওয়ার।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ম্যাচে আচরণবিধি ভেঙে শাস্তি পেলেন জোসেফ
তবে দলের বিপর্যয়ে বোলার থেকে ব্যাটার বনে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন পেসার তানজিম সাকিব। অষ্টম উইকেটে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে গড়েন ওয়ানডেতে বাংলাদেশের রেকর্ড জুটি। ১০৬ বলে ৯২ রান আসে তাদের জুটিতে। ওয়ানডেতে অষ্টম উইকেটে এতদিন বাংলাদেশের রেকর্ড রানের জুটি ছিল মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও মোহাম্মদ মিঠুনের। ২০১৯ সালে নেপিয়ারে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৮৪ রানের জুটি গড়েছিলেন তারা।
তবে দারুণ ইনিংস খেললেও তানজিমের আক্ষেপ থেকে যাবে ফিফটি না পাওয়ার। ৬২ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৪৫ রান করে রস্টন চেজকে স্ট্রেইট তুলে মারতে গিয়ে তারই হাতে ধরা পড়েন। ক্রিজে স্থায়ী হননি মাহমুদউল্লাহও। অবশ্য ফিফটি তুলে নিয়েছেন তিনি। ৯২ বলে ৪ ছক্কা ও ২ চারে ৬২ রান করে আউট হন তিনি। শেষদিকে শরিফুল ইসলামের ৮ বলে ১৫ রানের ইনিংসে ২২৭ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।
]]>