ব্যাংক নিরীক্ষায় নিয়োগ হচ্ছে বিদেশি প্রতিষ্ঠান

ব্যাংকগুলোর ঝুঁকিভিত্তিক সমন্বিত নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে যোগ্য আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করতে একটি বিশেষ বিধান প্রণয়ন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সেক্রেটারি ডিপার্টমেন্ট (এসডি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

 

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক আইন অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের এক বৈঠকে ‘স্পেশাল রেগুলেশনস অব বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২৪’ শীর্ষক এই বিধান প্রণয়ন করা হয়েছে। এই বিধানে ব্যাংক কোম্পানি ও ব্যাংকিং নীতিমালার উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করবে, যারা নির্দিষ্ট ব্যাংকে গভীর নিরীক্ষা চালাবে।

 

আরও পড়ুন: ক্ষতবিক্ষত ব্যাংকখাত, মোট ঋণের ২৫ শতাংশ পৌঁছাবে খেলাপির খাতায়!

 

ব্যাংকের সমন্বিত নিরীক্ষা বা তার অংশ পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক যোগ্য আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করবে উল্লেখ করে বিধানে বলা হয়েছে, সমন্বিত নিরীক্ষার শর্তাবলি এবং এ কাজের জন্য আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে যে সম্মানী দেয়া হবে বা যে পদ্ধতিতে তা পরিশোধ করা হবে, তা চুক্তির মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।

 

আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সমন্বিত নিরীক্ষা বা তার অংশ তারা যেভাবে সুবিধাজনক মনে করে, সেভাবে বাস্তবায়ন করতে পারবে। এ সংক্রান্ত শর্তাবলি নির্ধারণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে তাদের আলাদা চুক্তি হতে হবে বলেও জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

 

সমন্বিত নিরীক্ষা কাজের জন্য তফসিলি ব্যাংকগুলো যাতে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে তাদের গ্রাহকদের বিষয়ে তথ্য জানায়, সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ এই বিধানের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে সাধারণ অনুমতি দিয়েছে। তফসিলি ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সমন্বয় করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি নির্দিষ্ট বিভাগকে দায়িত্ব দেবে।

 

আরও পড়ুন: কোটিপতি পুরুষদের ব্যাংক হিসাব কমলেও গৃহিণীদের আমানত বাড়ছে

 

চুক্তি অনুসারে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দেবে। এরপর গভর্নর পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওই প্রতিবেদন পরিচালনা পর্ষদের কাছে পেশ করবেন। বিশেষ বিধানে সমন্বিত নিরীক্ষার সংজ্ঞা হিসেবে বলা হয়েছে, এর মাধ্যমে ঝুঁকিভিত্তিক বিস্তারিত নিরীক্ষা করা হবে, যাতে সম্পদের মান পর্যালোচনা, করপোরেট সুশাসন পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং ব্যাংকের নীতি, পদ্ধতি, প্রক্রিয়া এবং আইন ও নিয়ন্ত্রণমূলক বিধিবিধানের পরিপালন বিষয়ে পর্যালোচনা থাকবে।

 

এছাড়া বিধান জারির কারণ সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রণমূলক বিভিন্ন ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও দেশের কিছু ব্যাংক বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। বিশেষ করে সম্পদের মান, করপোরেট সুশাসন, নীতিমালা এবং আইন ও বিধিবিধানের পরিপালনের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর ফলে ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর সাধারণভাবে মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস নষ্ট হচ্ছে। এতে পুরো ব্যাংক খাতের বিশ্বাসযোগ্যতাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

 

এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেশের সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা বিধান অবিলম্বে কার্যকর হবে।

]]>