ব্যবসায়িক ও অবৈধ সম্পর্কের দ্বন্দ্বেই বাবলু দত্তকে হত্যা, গ্রেফতার ২

৪ দিন আগে
খুলনার হরিণটানা এলাকায় নির্মমভাবে খুন হওয়া ব্যবসায়ী বাবলু দত্ত হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ঘটনার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই হত্যার সঙ্গে জড়িত দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে হরিণটানা থানা পুলিশ।

শনিবার (২৮ জুন) হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণকারী বাবলুর ব্যবসায়িক অংশীদার ও কথিত ধর্ম মামা সুমন শেখ এবং তার সহযোগী মুক্তি মোল্যাকে আটক করা হয়। পুলিশ হত্যায় ব্যবহৃত দুটি ধারালো চাপাতি, দুটি মোবাইল ফোন ও একটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করেছে।


পুলিশ জানায়, নিহত বাবলু দত্ত (৫০) ও তার ছেলে দিপু দত্ত যৌথভাবে ইট, বালু, সিমেন্ট ও কাপড়ের ব্যবসা পরিচালনা করতেন। এ ব্যবসার অংশীদার ছিলেন গ্রেফতার সুমন শেখ। মুসলিম হয়েও তিনি হিন্দু পরিচয়ে বাবলুর পরিবারের সঙ্গে ধর্মীয় সম্পর্কের ছদ্মাবরণে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করেন। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, সুমন বাবলুর স্ত্রীসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করছিলেন। বিষয়টি জানাজানি হলে বাবলু বাধা দেন এবং এর জের ধরেই তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।


ঘটনার দিন ২৬ জুন রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে বাবলু দত্ত দোকান থেকে মোটরসাইকেলে করে বের হন। এরপর তিনি নিখোঁজ হন। রাত ১১টার দিকে স্থানীয় এক বাসিন্দা বাবলুর মোটরসাইকেল রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরবর্তীতে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে পাশের মেহগনি বাগানের ভেতর থেকে গলা কাটা অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।


২৭ জুন মামলা রুজু হওয়ার পর হরিণটানা থানা পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে কৈয়া বাজার ও ফুলতলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে সুমন শেখ ও মুক্তি মোল্যাকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার কথা স্বীকার করে এবং তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রাজবাঁধ দক্ষিণপাড়ার একটি খাল থেকে দুটি ধারালো চাপাতি উদ্ধার করা হয়, যা হত্যায় ব্যবহৃত হয়েছিল।


আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে স্কুলছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, স্বজনদের দাবি ধর্ষণের পর হত্যা


খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার খন্দকার হোসেন আহমেদ জানান, এই হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ ছিল পারিবারিক স্বার্থ, প্রতারণা এবং অবৈধ সম্পর্কের দ্বন্দ্ব। আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হয়েছে।


তিনি আরও জানান, সুমন শেখের বিরুদ্ধে অতীতেও দুটি মামলা ছিল। এছাড়া, হত্যাকাণ্ডে অন্য কেউ জড়িত আছে কি না, সে বিষয়েও তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।


এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। দীর্ঘদিনের পরিচিত এবং পারিবারিক সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে একজন ব্যক্তিকে এভাবে হত্যা করায় অনেকেই বিস্মিত ও আতঙ্কিত। পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ ও রহস্য উদঘাটন স্থানীয়দের মাঝে কিছুটা স্বস্তি এনে দিলেও হত্যার পুরো চক্র ও উদ্দেশ্য নিয়ে আরও প্রশ্ন রয়ে গেছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন