বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকে ছুরিকাঘাতে জখম

১ সপ্তাহে আগে
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ময়মনসিংহ মহানগর শাখার সদস্য সচিব আল নূর মো. আয়াসকে মারধর ও ছুরিকাঘাতে জখম করা হয়েছে।

সোমবার (২৬ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরের পাটগুদাম ব্রিজ মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তিনি শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।


আল নূর মো. আয়াস বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ময়মনসিংহ মহানগর কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার বাড়ি জেলার তারাকান্দা উপজেলার কামারগাঁও ইউনিয়নের গোবিন্দখিলা গ্রামে। ওই গ্রামের মোস্তফা কামালের ছেলে তিনি। তবে ময়মনসিংহ নগরের বাঘমারা এলাকায় আল নূর বসবাস করেন। আয়াস বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শুরু থেকেই সক্রিয় ছিলেন।


জানা যায়, সকালে নেত্রকোনার শ্যামগঞ্জ থেকে এক স্বজনকে দেখে ময়মনসিংহে ফিরছিলেন আয়াস। নগরের পাটগুদাম ব্রিজ এলাকায় যানজটের কারণে বাস থেকে ব্রিজ মোড়ে নেমে পড়েন তিনি। এ সময় মোবাইল ফোনে কল আসায় দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় ৫-৬ জন দুর্বৃত্ত তার ওপর হামলা চালায়। এ সময় তাকে কিল-ঘুষি ও লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকেন দুর্বৃত্তরা। একপর্যায়ে তাদের ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে হাতে ও পায়ে ছুরিকাঘাত করে চলে যান তারা। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।


আহত আল নূর মো. আয়াস বলেন, বাস থেকে নামার পর মোবাইল ফোনে কল আসায় ব্রিজ মোড়ে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম। ওই অবস্থায় ৫-৬ জন যুবক আসেন, তাদের কাউকে আমি চিনি না। আমাকে ছুরি ঠেকিয়ে নিচের দিকে যেতে বলেন। সে এলাকাটিতে ‘জয়বাংলা চত্বর’ ছিলো। তাদের হাতে ছুরি আর আমার সঙ্গে কেউ ছিলো না।’


আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, আহত ১৫


তিনি আরও বলেন, ‘নিচে নিয়ে যাওয়ার পর তারা বলতে থাকেন, তুই বেশি বারাবারি করতাছিস। তোদের একেকটাকে ধইরা পিটাইয়া শেষ করে দেব। ব্রিজ মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুারাল তুই ভেঙেছিস। তোকে আজকে মেরেই ফেলব, একটাকেও রাখবো না। তুই অনেক কিছু করেছিস, অনেক ক্ষতি করেছিস আমাদের। এ ছাড়াও বিভিন্ন রকম কথা বলতে থাকে। আল নূর দাবি করেন, দুর্বৃত্তরা তাকে বলতে থাকেন- ‘তুই আওয়ামী লীগকে থ্রেড দিস। এগুলো বলার পর আমার শরীরে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকেন। যখন দেখি ছুরি দিয়ে আঘাত করবে তখন দুজনকে ধাক্কা দিয়ে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করলে হাতে ও পায়ে ছুরিকাঘাত করে। যাবার সময় তারা বলছে, যেখানেই পাবে সেখানেই পেটাবে। তোদেরকে মেরে ফেলবই আমরা, তোদের অস্তিত্ব রাখবো না। তোদের জন্য আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে।’


ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আয়াসের পায়ে ছুরিকাঘাত আছে। দেহের অন্যান্য স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার চিকিৎসা শুরু হয়েছে, বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে সে শঙ্কামুক্ত।’


বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ময়মনসিংহ জেলা শাখার সদস্য সচিব মো. আলী হোসেন বলেন, ‘আহত ছাত্র নেতার বর্ণনা অনুযায়ী ধারণা করছি, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের লোকজন এটি করে থাকতে পারেন। তবে, তদন্তে প্রকৃত বিষয়টি জানা যাবে।’


আরও পড়ুন: হাসনাতের ওপর হামলার ঘটনায় গাজীপুরে হত্যাচেষ্টা মামলা


তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের যোদ্ধাকে আজকে যদি এভাবে আক্রমণ করে তাহলে সামনের দিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি মানুষ আস্থা হারাবে। অপরাধীদের অতিদ্রুত চিহ্নিত করে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি আমরা।


ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘কারা কী কারণে হামলা করেছে তা বলা যাচ্ছে না। আহত ছাত্রনেতাও হামলার কারণ সম্পর্কে বলতে পারছে না। আমরা জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছি।’


 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন